রেললাইন অবরোধ করা তিতুমীর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের জনগণই উঠিয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে শহীদ দিবস সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা সভা ও কোর কমিটির সভা শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের রেললাইন থেকে জনগণই তুলে দেবে। তিতুমীর কলেজ আন্দোলন করে মানুষের ভোগান্তি তৈরি করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নত হয়েছে, তবে আরও উন্নত হওয়া প্রয়োজন।
আন্দোলনের বিষয়ে তিতুমীর কলেজ কর্তৃপক্ষ কী বলছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাত কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে আমি বসেছিলাম। টেলিফোনে তো সবসময় কথা হচ্ছে। তারা সবাই চান, শিক্ষার একটা সুষ্ঠু পরিবেশ প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসুক। ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত না। তারাও চায় যেন শিক্ষার পরিবশে অব্যাহত থাকে।
এর আগে, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে মহাখালীতে রেললাইন অবরোধ করেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে দেশের বেশিরভাগ জেলার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাসবর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ৭ দফা দাবিও জানিয়েছেন।
দাবিগুলো হলো-
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৫. একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুনগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিকমানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।