অধিনায়ক শান্তর চোখে এই সিরিজ শুধু মুশফিকের

4 hours ago 4

সাদা চোখে এটা বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড টেস্ট সিরিজ। পরিসংখ্যানের খাতায় সেটাই লিখা আছে। থাকবেও; কিন্তু আগামীকাল ১১ নভেম্বর পুণ্যভূমি সিলেটে যে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে, তার আরও একটি রূপ আছে। ওই সিরিজটি হতে পারে বাংলাদেশের সফলতম টেস্ট ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের একান্তই নিজের টেস্ট সিরিজ।

সাধারণতঃ কেউ সিরিজ সেরা হলেই বলা হয় এ সিরিজ ‘অমুকের’ সিরিজ; কিন্তু সিরিজ তো এখনো শুরুই হয়নি। তাহলে এটা মুশফিকের সিরিজ কি করে হয়? নিশ্চয়ই প্রশ্ন উঠছে। খানিক গোলমেলে ঠেকছে, তাই না? তাহলে ব্যাপারটা খোলাসা করাই ভাল। আসলে বাংলাদেশ টেস্ট স্কোয়াডের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ট ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম দাঁড়িয়ে আছেন এক বিরাট মাইল ফলকের ঠিক দোরগেড়ায়।

সিলেটের ম্যাচটি হবে টেস্টে বাংলাদেশের টপ স্কোরারের ৯৯তম টেস্ট ম্যাচ। আর ঢাকার শেরে বাংলায় আগামী ১৯ নভেম্বর যে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু, সেটা হবে মুশফিকের শততম বা ১০০ নম্বর টেস্ট। বলার অপেক্ষা রাখে না, মুশফিকই হবেন বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার যার নামের পাশে থাকবে ১০০তম টেস্ট।

বাংলাদেশের আর কোন ক্রিকেটার শততম টেস্ট খেলতে পারেননি। ১০০ টেস্ট খেলা বহুদূরে, ৮০ টেস্টও খেলতে পারেননি কেউ। মুশফিকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৩ টেস্ট আছে মুমিনুল হকের। সাকিব আল হাসান ৭১টি এবং তামিম ইকবাল খেলেছেন ৭০টি ম্যাচ। মিরাজের এটা হবে ৫২ নম্বর টেস্ট। লিটন দাস খেলেছেন ৫০টি টেস্ট। কাজেই খুব স্বাভাবিকভাবেই এ সিরিজটি মুশফিকের জন্য এক অন্য ও ভিন্ন আবেদনে ভরা সিরিজ। তাই বলা হচ্ছে এ সিরিজ শুধু টিম বাংলাদেশের নয়। মুশফিকেরও।

আগামীকাল মঙ্গলবার সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরুর ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, তারা মানে বাংলাদেশ দলও মুশফিকুর রহিমের কথা ভেবেই এ টেস্ট সিরিজ খেলতে মুখিয়ে আছে এবং তাদের মাথায়ও আছে এ টেস্ট সিরিজটা মুশফিকুর রহিমের সামনে এক অন্যরকম মাইলফলক ছোঁয়ার সিরিজ। তাই মুশফিকের কথা ভেবেই এ সিরিজটা অন্যভাবে উপভোগ করতে চান। সেলিব্রেট করতে চান।

মুশফিকের শততম টেস্ট হাতছানি দিচ্ছে। ড্রেসিং রুমে সে ঘটনা কতটা আলোড়িত করছে ক্রিকেটারদের? মুশফিক অবশ্যই এক্সাইটেড। তার সহযোগী ক্রিকেটারদের মনেও কি সে আবেগ, উচ্ছ্বাসের ছটা পড়েছে?

আইরিশদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে আজ সোমবার সিলেটে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল টাইগার ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে।

শান্ত বলে ওঠেন, সবাই খুবই এক্সাইটেড। আমার মনে হয় যে কালকে ইনশাআল্লাহ ৯৯তম হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই দুটি টেস্ট সেলিব্রেট করতে চাই। মুশফিক দলে থাকা সব সময়ই ভাল লাগার। তার দীর্ঘ খেলোয়াড়ী জীবনের অভিজ্ঞতা দলের অন্যতম সম্পদ। তা জানিয়ে বাংলাদেশ টেস্ট ক্যাপ্টেন বলে ওঠেন, ‘মুশফিক ভাই ড্রেসিং রুমে থাকা অলওয়েজ আমাদের জন্য ভালো লাগার বিষয়। কারণ হলো টেস্ট ক্রিকেটটা অবশ্যই আমরা সবসময় এক্সপেরিয়েন্সকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিই। তাই উনার (মুশফিকের) এত বছরের একটা ক্যারিয়ার এটা আমাদের অনেক হেল্প করে। শান্ত আরও জানান, ক্রাঞ্চ মোমেন্টের প্রেসারগুলো কিভাবে হ্যান্ডেল করা যায়, তা আলোচনা করতে গিয়ে মুশফিকের অভিজ্ঞতাটার প্রসঙ্গ চলে আসে।’

শান্ত কথাবার্তায় পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন, তারা এ টেস্ট সিরিজটি মুশফিকের জন্যই উপভোগ করতে চান। তার ভাষায় সবাই মিলে একসাথে উপভোগ করতে চাই। স্পেশালি ১০০তমটা যদি উনি সুস্থভাবে খেলতে পারে, তাহলে ওই পাঁচটা দিন আমরা সবাই মিলে সেলিব্রেট করবো এবং এবং পুরা দিনটা, পাঁচটাদিন খুব ভালোভাবে এনজয় করতে চাই। সো খুবই আশাবাদী ইনশাআল্লাহ উনি সুস্থভাবে দুইটা টেস্ট ম্যাচ খেলবেন।’

এআরবি/আইএইচএস/

Read Entire Article