অনলাইনে জুয়া খেললেই গতি কমবে ইন্টারনেটের, বন্ধ হবে বিকাশ

3 hours ago 9

অনলাইন জুয়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখালে অনলাইন গণমাধ্যমসহ সব ধরনের সাইট ব্লকসহ নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেছেন সব অংশীজনরাও।

এবার অনলাইনে জুয়ায় জড়ালে সেই ব্যক্তির মোবাইল নম্বর চিহ্নিত করে তাতে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি কেউ অনলাইন বেটিংয়ে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে তার বিকাশ নম্বরটিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় অংশ নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির কর্মকর্তা এবং বিকাশ, পেমেন্ট সিস্টেম এজেন্সির প্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানান। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি সভাকক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস (মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস) হিসাব এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।

বিশেষ সহকারী বলেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের ফোন নম্বরের ইন্টারনেট গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। এছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকে-ওয়াইসি সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করা হবে।

অনলাইনে জুয়া খেললেই গতি কমবে ইন্টারনেটের, বন্ধ হবে বিকাশ

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, দেশকে অনলাইন জুয়া থেকে মুক্ত করতে হলে জুয়ার চক্রের সুডো সদস্যদের চিহ্নিত করা, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে লিংক স্লো করা এবং যে নম্বর বা এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়; সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাচাইয়ের পর এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। তবে ন্যায্যতা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

সভায় অংশ নিয়ে বিকাশের একজন প্রতিনিধি জানান, জুয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত দুই সপ্তাহে ৩৯৭টি মোবাইল নম্বর বন্ধ করা হয়েছে এবং এখন ক্রলিং ইঞ্জিন ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন ট্র্যাকিং প্রক্রিয়া উন্নয়ন করা হচ্ছে।

পেমেন্ট সিস্টেম এজেন্সির আরেকজন প্রতিনিধি জানান, সিম, মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সমন্বয় করা গেলে অনলাইন জুয়ার সমস্যা অনেকাংশে সমাধান সম্ভব।

এদিকে সভায় প্রস্তাব করা হয়, অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।

অনলাইন জুয়া বন্ধে করণীয় ঠিক করতে ডাক এ সভায় মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে এটি সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছেন, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।

এএএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম

Read Entire Article