আমরা ভাবি, ঘুমের মান ভালো রাখতে শুধু শান্ত ঘর, আরামদায়ক বালিশ আর নরম বিছানা দরকার। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, অন্তর্বাস পরে ঘুমানোর অভ্যাসও আপনার রাতের ঘুমে প্রভাব ফেলতে পারে?
ভালো ঘুমের জন্য শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা একটু কমে আসা দরকার। গবেষণায় দেখা গেছে, টাইট বা সিনথেটিক কাপড় শরীরের তাপ আটকে রাখে। ফলে শরীর যথেষ্ট ঠান্ডা হতে পারে না, আর গভীর ঘুম ব্যাহত হয়। বিপরীতে, ঢিলেঢালা সুতি কাপড় ও অন্তর্বাস ছাড়া ঘুমালে শরীর স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হয়, যা ঘুমের মান বাড়াতে সাহায্য করে।
এছাড়াও এখানে জড়িত আছে স্বাস্থ্য ও ত্বকের যত্ন। রাতভর আঁটসাঁট বা বাতাস চলাচল না হওয়া কাপড় পরে থাকলে ঘাম ও আর্দ্রতা জমে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। এর ফলে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হয়, যা মাঝরাতে ঘুম নষ্ট করে দিতে পারে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে বাতাস চলাচল না হলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
তবে অনেকেই আবার অন্তর্বাস পরে ঘুমাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এতে তারা মানসিকভাবে ‘নিরাপদ’ অনুভব করেন। অর্থাৎ, অন্তর্বাস পরবেন কি না — তা নির্ভর করছে আপনার আরাম ও অভ্যাসের ওপর।
২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক ‘স্লিপ ফাউন্ডেশন’ এর একটি গবেষণা অনুযায়ী -- ৪৩ শতাংশ মানুষ ঘুমোনোর সময়ে কোনও অন্তর্বাস পরতে পছন্দ করেন না। আবার ২০১৮ সালের হার্ভার্ড পাবলিক হেল্থ-এর তথ্যমতে, পুরুষদের মধ্যে যারা ঘুমোনোর সময়ে আঁটসাঁট বা টাইট অন্তর্বাস পরেন না, অন্যদের তুলনায় তাদের দেহে শুক্রাণুর পরিমাণ ১৭ শতাংশ বেশি হয়।
অর্থাৎ, ঢিলেঢালা, নরম আর বাতাস চলাচল হয় এমন কাপড় বেছে নেওয়াই ঘুমের জন্য সেরা উপায়। তাই ভালো ঘুমের রহস্য শুধু আলো–অন্ধকার বা নীরবতা নয়; পোশাক ও অন্তর্বাসের অভ্যাসও এর সঙ্গে জড়িত।
সূত্র: ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল – ডিভিশন অব স্লিপ মেডিসিন, ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন, ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক, জার্নাল অব ফিজিওলজিক্যাল অ্যানথ্রোপোলজি
এএমপি/এএসএম