দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও মূত্রনালির জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা মো. ফয়সাল খাঁন। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার অর্থ বহন করে আসায় বর্তমানে তার চিকিৎসার ব্যয় করার সামর্থ্য নেই। এই অবস্থায় তার পাশে এগিয়ে এলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা তার কার্যালয়ে মো. ফয়সাল খাঁনের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।
ফয়সাল খাঁন বলেন, আমি একসময় বেসরকারি কোম্পানি একমি ফার্মাসিউটিক্যালসে কর্মরত ছিলাম। কিন্তু দীর্ঘদিনের অসুস্থতার কারণে আমার চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। পরে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সামান্য বেতনের চাকরি নেই। কিন্তু দিনদিন অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে ওঠে। এদিকে চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু অপারেশনের বিপুল খরচ বহন করার মতো সামর্থ নেই আমার। বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই, বাবা মৃত্যুর আগে ভিটে বাড়ি বিক্রি করে যাওয়ায় এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ফয়সাল বলেন, আমার চার বছরের মেয়ে শিফা একটি দুর্ঘটনায় ঠোঁট কেটে ফেললেও টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারিনি। অসুস্থতার কারণে আমার ছোট ছেলে নাজাত মাহিকে প্রতিদিন মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে কাজে পাঠাতে বাধ্য হয়েছি। একজন বাবা হিসেবে এটা আমার জন্য ভীষণ কষ্টকর।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক তার এই দুর্দশার কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন।
এ বিষয়ে ফয়সাল বলেন, স্যার অনেক ভালো মানুষ। আমি তার কাছে সরকারিভাবে একটি ঘর দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। উনি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। চিকিৎসার ব্যয় বহন করার সামর্থ আমার নেই। সংসার চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। সমাজের বিত্তবানরা যদি আমার পাশে দাঁড়ান, তবে হয়তো আমি আবার সুস্থ হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারব।
ফয়সালের প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি আমার সাধ্যমতো ফয়সালের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। তিনি যেন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এমএন/জেআইএম