রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার কবরে ভাঙচুর ও মরদেহে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এই দাবি জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে, শুক্রবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফ ও তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বেরিয়ে আসা একদল লোকের এই হামলায় কবর অবমাননা ও মরদেহে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি দরবারের ভক্ত, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশসহ ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি একজন নিহত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ বর্বর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং একই সঙ্গে এই ঘৃণ্য অপরাধে জড়িতদের অতিদ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।
বার্তায় আরও বলা হয়, এর আগেও আমরা নানা সময়ে মাজার, দরগাহ এবং ওরসকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানোত্তর এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনা বেশ উদ্বেগজনক ও উৎকণ্ঠার বিষয়। মনে রাখতে হবে, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা একটি ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা— যেখানে দল, মত, ধর্ম, জাতি ও শ্রেণি নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে। অথচ এ ধরনের ঘৃণ্য ও সহিংস হামলা সেই ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’ গঠনের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানায়, এসব ঘটনার দায় অবশ্যই অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে এসব থামাতে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। ফলে, মাজার ভাঙচুর, কবর অবমাননা ও মরদেহে অগ্নিসংযোগের মতো এ ধরনের সহিংসতা সরকারের নানা ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ।
‘এছাড়া বেশ উদ্বেগের সঙ্গে উক্ত ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের কয়েকজন স্থানীয় নেতার সম্পৃক্ততা বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে আমরা লক্ষ করেছি; জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম শক্তি কর্তৃক এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, এই ধরনের হামলা অমানবিক, মূল্যবোধবিরোধী এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে সরাসরি বাধা।’
অপরাধীরা যে দলেরই হোক না কেন দ্রুত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এনএস/ইএ