অপহরণ নয়, ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন সজীব : পুলিশ

11 hours ago 3
নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী সজীব হোসেনকে উদ্ধার করেছে যশোর জেলা পুলিশ। পুলিশ বলছে, অপহরণ বা গুম নয়; ব্যক্তিগত কারণে বন্ধু নাজমুল হাসান রকির বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। বুধবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে যশোর জেলা পুলিশ মিডিয়া সেল থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  সজীব হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। গত নভেম্বর মাসে পদত্যাগ করেন এবং বিপ্লব ২৪ নামে একটি সংগঠন গঠন করেন। এ ছাড়া তিনি যবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন। যশোর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের বিবৃতিতে বলা হয়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোতয়ালী মডেল থানাধীন চুড়ামনকাটির বাগডাঙ্গা এলাকার একটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ মো. সজীব হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সজীব হোসেন তার ব্যক্তিগত কারণে তার এক বন্ধু চুড়ামনকাঠির নাজমুল হাসান রকির বাড়িতে ফোন বন্ধ করে রাত থেকে অবস্থান করছিলেন। তাকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে তার বোন মোছা. লাবনী খাতুন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জিম্মায় দেওয়া হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার পর থেকে সজীব হোসেনের নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আমজাদ হোসেন যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এদিকে ‘সজীবকে যবিপ্রবির ছাত্রদল নেতা’ দাবি করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত যবিপ্রবিতে ছাত্রদলের কমিটি গঠন হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের তৎপরতায় ৮ জানুয়ারি রাতে সজীবকে তার বন্ধুর বাসা থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ। পরে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। সজীবের বন্ধু ও যবিপ্রবির শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন বলেন, সজীব ভাইরাল হওয়ার জন্য আত্মগোপন ছিল। ও যখন আমাকে ম্যাসেজ দেয় ‘তুই কই?, আমার সঙ্গে একজন খারাপ ব্যবহার করছে, ৩/৪জন ছেলে হাতে ছুরি নিয়ে আছে।’ পরবর্তীতে এক বন্ধুর কাছে চলে যায় সে। আমার কথা হচ্ছে, রাত ৯টার পর থেকে পরের দিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত আমাকে জানাল না কেন যে আমি নিরাপদ আছি, ভালো আছি। তার জন্য আমি সারা রাতদিন শিক্ষক, ডিএসবি, এনএসআই, পুলিশ, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি মনে করি আমাকে ব্যবহার করে নিজেকে ভাইরাল করার জন্য এমন আত্নগোপনে ছিল সজীব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলার আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, সজীব যে বিতর্কিত কাজটি করেছে সেটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করেছে। ছাত্রদের আন্দোলনকে পুঁজি করে হাইলাইট হওয়ার জন্য বাজেভাবে ব্যবহার করেছে। এতে করে ছাত্রসমাজ যেভাবে অপমানিত হয়েছে পাশাপাশি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ক্ষুণ্ণ করেছে, যার কোনো ক্ষমা হয় না। সজীব যে নাটক মঞ্চস্থ করেছে তার মদদদাতা যারা তাদের খুঁজে নিয়ে আসা হোক। কেন তারা এমন নাটক  করল? কেন শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ে খেলা করা হল? আমরা মনে করি সজীব যেভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এর জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত। এ বিষয়ে জানতে সজীব হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সজীবের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানতে পেরে আমি যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি জিডি করেছিলাম। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করলে আমরা পুলিশ সুপার অফিসে যাই। পরে আমাদের ও তার বোনের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
Read Entire Article