অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকলে কি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়

4 hours ago 4

বর্তমান কর্পোরেট জীবনে চাকরিজীবীদের দিনের একটি দীর্ঘ সময় কেটে যায় অফিস ডেস্কে কম্পিউটারের সামনে বসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডেস্কে বসে কাজ অনেকের কাছে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বাইরে থেকে বিষয়টি সাধারণ মনে হলেও, এই অভ্যাস শরীরের ভেতরে হরমোনের সূক্ষ্ম ভারসাম্য নষ্ট করছে।

জেনে নিন অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে কী কী স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পরে ও কীভাবে তা প্রতিরোধ করবেন-

১. ইনসুলিনের কার্যকারিতা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। দীর্ঘ সময় বসে থাকলে শরীরে ইনসুলিন হরমোন সঠিকভাবে কাজ করে না, ফলে রক্তে শর্করা বেড়ে যায়। এটি টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। একই সঙ্গে কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোন অতিরিক্ত নিঃসৃত হয়ে অনিদ্রা, উৎকণ্ঠা ও মাথাব্যথার মতো সমস্যাকে ঘন ঘন ডেকে আনে।

অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকলে কি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়

২. টেস্টোস্টেরন ও গ্রোথ হরমোনের মাত্রা

টানা দীর্ঘ সময় বসে কাজের অভ্যাস টেস্টোস্টেরন ও গ্রোথ হরমোনের মাত্রা কমাতে শুরু করে। এর ফলে পেশি দুর্বল হয়, ওজন নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে।

৩. লেপ্টিন ও ঘ্রেলিন হরমোনের স্বাভাবিকতা

এ অভ্যাভ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী লেপ্টিন ও ঘ্রেলিন হরমোনের স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়। এতে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, যা সরাসরি স্থূলতার দিকে ঠেলে দেয়।

অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকলে কি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়

৪. হ্যাপি হরমোনের ঘাটতি

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীর নিয়মিত সচল না রাখলে এন্ডোরফিন বা ‘হ্যাপি হরমোন’ কম নিঃসৃত হয়। এর প্রভাব পড়ে মানসিক সুস্থতায়। এর প্রভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠে, মন খারাপের প্রবণতা বেড়ে যায়।

সমাধান কী?

দীর্ঘ সময় বসে কাজের অভ্যাস ভাঙতে হবে ধাপে ধাপে। প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর দাঁড়িয়ে কয়েক মিনিট হাঁটা, অফিসে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার, ডেস্কে বসেই হাত–পায়ের স্ট্রেচিং কিংবা দুপুরের বিরতিতে হালকা হাঁটা — এসব ছোট পরিবর্তনই হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে পারে।

অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকলে কি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়

শরীরে হরমোনের ভারসাম্য সুস্থতার জন্য আবশ্যক। তাই আজ থেকেই সচেতন হওয়া দরকার। অফিসের চেয়ারে দীর্ঘসময় বন্দি না থেকে ছোট ছোট বিরতি নিলে শরীরের হরমোনগুলো স্বাভাবিকভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে।

অভ্যাস পাল্টে দেখুন, মানসিক ক্লান্তি ও হতাশামূলক চিন্তায় পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন আপনি নিজেই।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, হার্ভার্ড মেডিকের স্কুল – হেলথ পাবলিশিং, জার্নাল অব এনডোক্রাইনোলজি

এএমপি/এএসএম

Read Entire Article