অবনতি হয়নি, পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্তও নন

2 months ago 8

খ্যাতিমান লালনসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার আর অবনতি হয়নি। তবে তিনি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্তও নন। তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন তার অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত দুদিন ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি। বরং তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ঝুঁকি রয়েছে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ও জনসংযোগ শাখা জানিয়েছে, ফরিদা পারভীনের চিকিৎসার জন্য গত ৯ জুলাই বিকেল ও ১০ জুলাই সকালে দুই দফা মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। চিকিৎসকেরা আন্তরিকভাবে তার সুস্থতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালটির একজন পরিচালক বলেছেন, ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে খুব ধীরে। আমরা আশাবাদী, তবে চিন্তাও রয়ে যাচ্ছে। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা যেকোনো সময় জটিলতায় রূপ নিতে পারে। তাকে দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার প্রকৃত অবস্থা জানতে যোগাযোগ করা হয় তার স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিমের সঙ্গে। আজ (১১ জুলাই) শুক্রবার সকালে গাজী আবদুল হাকিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘তিনি (ফরিদা পারভীন) এখনো হাসপাতালে আছেন। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে ভালোর দিকে। ক্রমে তার অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’

অবনতি হয়নি, পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্তও ননফরিদা পারভীন ও গাজী আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ৫ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন ফরিদা পারভীন। তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা। রক্তেও ধরা পড়ে সংক্রমণ। কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যাওয়ায় সপ্তাহে তিন দিন তাকে ডায়ালাইসিস করানো হয়। এ সময় তার চেতনাও কাজ করছিল না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিল্পীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। এমনকি তার জন্য গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড।

ফরিদা পারভীনের অসুস্থতার খবরে তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য কামনা করা হয়। পরে তার ছেলে সাহায্যের প্রয়োজন অস্বীকার করেন। তার স্বামী জানান, অর্থ নয় সুচিকিৎসার দায়িত্ব নিলেই তারা উপকৃত হবেন। শুরু হয় শিল্পীর চিকিৎসা। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ফরিদার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে বিব্রত হয় তার পরিবার।

ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত পরিবেশন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে দেশের গান গেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান তিনি। ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। ১৯৯৩ সালে প্লেব্যাকের জন্য পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মানুষ তাকে লালনসম্রাজ্ঞী বলেও ডাকেন।

এমএমএফ/আরএমডি/জিকেএস

Read Entire Article