দৌড় শেষ হয়ে গেছে ৩০ সেকেন্ড আগে। তখনও নির্ধারণ করা যায়নি, আসলে কে চ্যাম্পিয়ন হলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নোয়াহ লিলেস নাকি জ্যামাইকার কিশানে থম্পসন? ৩০ সেকেন্ড পর সঠিক হিসাবটা পাওয়া গেলো। অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে অভিনব এক রেকর্ডও হয়ে গেলো ততক্ষণে। সবচেয়ে কম ব্যবধানে কোনো প্রতিযোগীর দ্রুততম মানব হওয়ার রেকর্ড।
কিশানে থম্পসনের চেয়ে মাত্র ০.০০৫ সেকেন্ড সময় বেশি নিয়ে প্যারিস অলিম্পিকের দ্রুততম মানব হলেন যুক্তরাষ্ট্রের নোয়াহ লিলেস। ১০০ মিটার দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নিয়েছেন ৯.৭৮৪ সেকেন্ড। থম্পসন সময় লাগিয়েছেন ৯.৭৮৯ সেকেন্ড। এত ক্লোজ ব্যবধান এর আগে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের ইতিহাসে আর হয়নি। ৯.৮১ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ জিতলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রেড কারলি।
নিঃসন্দেহে অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। উসাইন বোল্ট থাকাকালীন সময়ে প্রতিযোগিও ছিলেন তেমন। জাস্টিন গ্যাটলিন, ইয়োহান ব্লেকদের মত প্রতিযোগি আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিলো ইভেন্টটিকে। এবার তাদের কেউ নেই। ফলে যেন অনেকটা জৌলুস হারিয়ে বসেছে অ্যাথলেটিক্স কিংবা অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্টটি।
তবুও, কে হবেন প্যারিস অলিম্পিকের দ্রুততম মানব? এটা নিয়ে ছিল তুমুল আগ্রহ। যেখানে চোখ ছিল, লিলেস-থম্পসনদের ওপরই। লড়াইটাও হলো হাড্ডাহাড্ডি। বিজয়ী নির্ধারণে এক সেকেন্ডকে হাজার দিয়ে ভাগ করতে হলো।
ফিনিশ লাইন শেষ করার পর নোয়াহ লিলেসের বিশ্বাস ছিল তিনি পারেননি। থম্পসনই জয় করেছেন স্বর্ণ পদক। এমনকি তিনি থম্পসনকে বলেছিলেনও, ‘তুমিই সম্ভবত গোল্ড পেতে যাচ্ছো।’
১০০ মিটার জয়ের পর বিস্মিত লিলেস বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, থম্পসনই আমার আগে দৌড় শেষ করেছে। এমনকি আমি থম্পসনকে বলেছিলামও, ব্রো বড় দানটা তুমিই মেরে দিয়েছো সম্ভবত। কিন্তু যখন স্কোরবোর্ডে আমার নামটা ভেসে উঠলো, তখন নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ‘
পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮০ মস্কো অলিম্পিকে সবচেয়ে কম ব্যবধানে ব্রিটেনের অ্যালান ওয়েলস হারিয়েছিলেন সিলভিও লিওনার্ডকে। মনে করা হয়, সেটাই ছিল ১০০ মিটার স্প্রিন্টের জগতে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। তবে, তখন কিন্তু ইলেক্ট্রনিক স্কোরবোর্ড ছিল না। যেখানে সেকেন্ডকে একহাজার ভাগে ভাগ করা যায়। ফলে, এবারের লিলেস এবং থম্পসনের ব্যবধানটাকেই সবচেয়ে কম হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
আইএইচএস/