বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অলোক সরকারের (২০) লাশ দেখে বাড়িতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন প্রতিবেশী দিদিমা স্বপ্না রানী সরকার (৪০)।
সোমবার (৩১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় এমন ঘটনাটি ঘটেছে।
স্বপ্না রানী সরকার উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের হিন্দু পানিসাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দুই সন্তানের মা। বড় মেয়ে অনামিকা সরকার (১৬) ও ছোট ছেলে উৎসব সরকার (৪)। তার স্বামী সঞ্জিত সরকার একজন কৃষক।
সঞ্জিত সরকার জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অলোক সরকার তাদের প্রতিবেশী ছিলেন এবং সম্পর্কে অলোক তাকে ‘দাদু’ ও স্বপ্না রানী সরকারকে ‘দিদিমা’ বলে ডাকত। বিকেলে যখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অলোকের লাশ গ্রামে আনা হয়, তখন গ্রামের অন্যান্য মানুষের সঙ্গে তার স্ত্রীও লাশ দেখতে যান। লাশ দেখার পর থেকেই তিনি কিছুটা অসুস্থ বোধ করতে থাকেন এবং বাড়ি ফিরে চুপচাপ হয়ে পড়েন। বিকেল সাড়ে ৫টায় অলোকের লাশ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎই স্বপ্না রানী সরকার ছটফট করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে মারা যান।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার ঝুপুনিয়া সেতুর মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন অলোক সরকার। তার সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু— জয়ন্ত সরকার ও শুভ সরকার আহত হন। তারা মোটরসাইকেলযোগে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেলে তিনজনই গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অলোক সরকারকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত জয়ন্ত সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, আর শুভ সরকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
একই দিনে অলোক সরকার ও তার প্রতিবেশী দিদিমার মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার দুটিতে নেমে এসেছে গভীর শোকের মাতম।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে স্বপ্না রানী সরকারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, স্বপ্না রানী সরকারের লাশ আগামীকাল মঙ্গলবার শেরপুর উত্তর বাহিনী মহাশ্মশানে সৎকারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।