ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলমান সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে উঠেছে। রাজ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা এবং সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যাচাই করার দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির প্রভাবশালী নেতা অমিত শাহ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির মন্ত্রী ও এমএলএদের বাসভবনে হামলা হওয়ার পর, রাজ্যের নিরাপত্তা পর্যালোচনার জন্য অমিত শাহ একটি সভা করেছেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) মহারাষ্ট্রে ৪টি নির্বাচনী সমাবেশ বাতিল করে তিনি এই নিরাপত্তা পর্যালোচনা সভায় অংশ নেন।
এদিকে মণিপুর রাজ্যের পরিস্থিতি আরো সংকটময় হয়ে ওঠে গত শনিবার। যখন রাজ্যে কারফিউ জারি করা হয় এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে সেনাবাহিনী ও আসাম রাইফেলস মোতায়েন করা হয়। রোববার, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল অভিজিৎ এস পেনধারকর ইম্ফলে পৌঁছান।
বর্তমানে, মণিপুরে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন ৬টি থানায় কার্যকর রয়েছে। রাজ্য সরকার শনিবার এই আইন রদ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছে।
সম্প্রতি ৩টি মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর আবারও সহিংসতা শুরু হয় এবং বিক্ষুব্ধ জনতা মণিপুরের মন্ত্রীদের বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ছাড়াও, কুকি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মেইতেই ত্রাণ শিবির থেকে ছয়জন অপহৃত হয়। যাদের মধ্যে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। রোববার আসামের একটি নদী থেকে আরও দুটি মরদেহ পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটি দুই বছর বয়সী শিশুর এবং অন্যটি ৬১ বছর বয়সী বৃদ্ধার।
উল্লেখ্য, মণিপুরের এ অশান্তির পেছনে দীর্ঘকালীন রাজনৈতিক ও সম্প্রদায়িক অস্থিরতার একটি ইতিহাস রয়েছে। গত বছরের মে মাসে মেইতেই সম্প্রদায় এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়, যা এখনো চলমান। সহিংসতার কারণে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জন নিহত এবং প্রায় ৬০,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে, অমিত শাহ রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা করছেন।