এসময়ে মৌসুমি আম বাজারে নেই বললেই চলে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার স্বপন আলী নামের এক চাষির বাগানে এখনো ঝুলছে প্রায় ৫০ মণ বারোমাসি কাটিমন জাতের আম। কিছু গাছে মুকুলও রয়েছে। অর্ধশত গাছে এসেছে আমের গুটি। সে আম বিক্রি হবে ভরা শীতকালে। এরই মধ্যে কাটিমন আম বিক্রি করে গত তিন মাসে আয় করেছেন সোয়া কোটির ওপরে ।
শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর এলাকায় চার বছর আগে ৫০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বারোমাসি কাটিমন জাতের আম চাষ শুরু করেন স্বপন আলী। তার ইচ্ছা ছিল শীতের সময়ে আম উৎপাদন করে বাজারজাত করার। সফলও হয়েছেন। স্বপনের বাগানের আমগুলো বর্তমানে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে ১২-১৫ হাজার টাকা মণ দরে ।
স্বপনের বাগানের কয়েকজন শ্রমিক বলেন, মৌসুমি আমের সময় কাজ করে বছরের বাকি সময় বসে কাটাতে হতো। স্বপন আলী অসময়ে আম চাষ করায় এখন আর আমাদের বসে থাকতে হয় না। সারাবছরই কাজ করতে পারছি।
স্বপন আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে সিজনাল আম চাষ করতাম। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সিজনাল আমের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অনেক লোকসান করে বারোমাসি আম চাষ শুরু করেছি। গত তিন মাসে এক কেটি ৩০ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। এখনো বাগানে ঝুলছে ৫০ মণেরও বেশি আম। কিছু গাছে মুকুল ধরেছে। সেগুলো বিক্রি হবে আরও দুই মাস পরে।’
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম। তিনি বলেন, অসময়ে আম চাষ করে চাষিরা অসাধ্যকে সাধন করেছেন। এখন সারাবছর এ জেলার আম পাওয়া যাবে। এতে লাভবান হবেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া বলেন, গত কয়েক বছরে মৌসুমি আমে চাষিরা লোকসান করায় বারোমাসি আম চাষে ঝুঁকছেন। এতে লাভবানও হচ্ছেন অনেকে। বারোমাসি কাটিমন আম বাণিজ্যিক সম্ভাবনা তৈরি করবে। অসময়ে এ আম আরও বেশি উৎপাদন করা গেলে বিদেশে রপ্তানির দ্বার খুলবে। চাঙা হবে জেলার অর্থনীতি।
চলতি মৌসুমে এবার উপজেলায় বারোমাসি জাতের আম চাষ হয়েছে ৪১৫ হেক্টর জমিতে। আগামীতে বিশ্ববাজারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে—এমনই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
এসআর/এএসএম