বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানির অন্য ব্যবসা–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণ, ঋণের বর্তমান অবস্থা ও পরিশোধের বিষয়ে রুলের শুনানি আগামী ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আইনজীবীর সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে এ আদেশ দেন।
আদালতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনীরুজ্জামান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আইনজীবী সময়ের আর্জি জানালে আদালত এক সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করেন। রুলের ওপর ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে।’
গত ২৫ বছরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অন্য সব ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিশোধের পর ঋণ মওকুফ বিষয়ে তথ্যাদি সরবরাহসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান গত সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। এতে বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করতে এবং গ্রুপটির কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনায় ছয় মাসের জন্য ‘রিসিভার’ নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়। আরেক নির্দেশনায় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানের নেওয়া অর্থ আদায় করতে ও বিদেশে পাঠানো অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেক্সিমকো গ্রুপে ‘রিসিভার’ নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত চেয়ে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পক্ষে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করা হয়। আপিল বিভাগ গত বছরের ১২ নভেম্বর শুধু বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ক্ষেত্রে ‘রিসিভার’ নিয়োগের আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি হাইকোর্ট এ–সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের আদেশ থেকে জানা যায়, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের অন্য সব ব্যবসা–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ, ঋণের বর্তমান অবস্থা ও রিপেমেন্টের (পরিশোধ) তথ্য দিতে এবং বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করে সেসব ব্যবস্থাপনায় রিসিভার নিয়োগের বিষয়ে রুল দেওয়া হয়।
রুলের ওপর গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর শুনানিতে বেক্সিমকো গ্রুপের দায়ের পরিমাণ তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী মুনীরুজ্জামান। সেদিন তিনি বলেন, ১৬টি ব্যাংক ও সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বেক্সিমকো গ্রুপের ৭৮টি প্রতিষ্ঠানের দায়ের পরিমাণ ৫০ হাজার ৯৮ দশমিক ৩ কোটি টাকা। এ হিসাব ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর শুনানি নিয়ে আদালত ২২ জানুয়ারি শুনানির জন্য দিন রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ৪ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপে এরই মধ্যে ‘রিসিভার’ নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. রুহুল আমিনকে রিসিভার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এফএইচ/এমএএইচ/জেআইএম