অসাড় বৃদ্ধকে ফেলে গেলেন স্বজনরা, ঠাঁই হলো বৃদ্ধাশ্রমে

3 months ago 60

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামের মৃত মজিদ মাতুব্বরের ছেলে আব্দুল খালেক (৬১)। গত ১৪ বছর ধরে তার অর্ধেক শরীর অসাড় (প্যারালাইজড)। কারও সহযোগিতা ছাড়া এক পাও হাঁটাচলা করতে পারেন না। যেখানে থাকেন সেখানে শুয়ে-বসেই সময় কাটাতে হয় তাকে। ভাই-বোন ও দুই ছেলে সন্তান থাকলেও তার অসুস্থ জীবনের সঙ্গী হননি কেউ।

সোমবার (৩ জুন) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ খালেককে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ফেলে রেখে যান তার স্বজনরা। এরপর টানা চারদিন ওই কার্যালয়ের সামনেই অবস্থান করেন তিনি। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আব্দুল খালেক সবার বড়। তার দুটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।

আব্দুল খালেক বলেন, পরপর আমার দুই স্ত্রীর মারা যান। ১৪ বছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্যারালাইসিসে আমার শরীরের এক পাশ অসাড় হয়ে পড়ে। এরপর বসতভিটা যা ছিল তা বিক্রি করে চিকিৎসা করি। এখন আমার কোনো জমিজমা ও সম্পদ বলতে কিছুই নেই। আমার দুই ছেলে আছে। তারা বিয়ে করে রাজবাড়ী জেলায় তাদের শ্বশুরবাড়িতে থাকে, আমার কোনো খোঁজ-খবর নেয় না। আমার ভাই-বোনেরা সবাই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। তারাও আমার খোঁজখবর নেয় না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আমি পাশের আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নেই। সেখানে দুই বছর থাকার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বৃহস্পতিবার আমাকে এখানে ফেলে রেখে যান।

দুই ছেলে আলমগীর মাতুব্বর (৪০) ও কলম মাতুব্বর (৩৫) রাজবাড়ী বসবাস করায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি তাদের ফোন নম্বর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি খালেকের কাছে।

তবে আব্দুল খালেকের শ্বশুরবাড়ি এলাকার জোসনা বেগম বলেন, আব্দুল খালেকের ছেলেদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম। তারা কেউ ওনার দায়িত্ব নিতে চান না।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, আমার অফিসের সামনে এক বৃদ্ধকে তার স্বজনরা ফেলে রেখে গেছেন এমন খবর জানতে পারি। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে তাদের যে বৃদ্ধনিবাস আছে, সেখানে তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এন কে বি নয়ন/কেএসআর

Read Entire Article