পাচারমুখী রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার করে পাচার বন্ধের আইন বানানোর দাবিতে অনেক দিন ধরে কাজ করছে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ। আবার রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক বক্তব্যের মূল জায়গাও এখানে। পাচার বন্ধ করে দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো। রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা ও সম্পদের উপর জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করা।
এই মিলের জায়গা থেকে সংগঠন দুটি বহুদিন ধরেই কাছাকাছি থেকে কাজ করে যাচ্ছে। এখন থেকে তারা সরাসরি, একসঙ্গে কাজ করবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেন উভয় সংগঠনের সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম বলেন, অহিংস গণঅভ্যুত্থানের নেতাকর্মীরা দেশের সবচেয়ে নিরীহ মানুষ। তাদের দাবিও খুব যৌক্তিক।
এই সরকার শ্বেতপত্র বের করার আগে হাসিনা সরকারের সময় ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচারের কথা বলেছেন৷ পাচারকৃত টাকা ফেরত আনারও বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মানে এক্ষেত্রে সরকার ও অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের লক্ষ একই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো হাসিনা সরকার যেমন অহিংস গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের হামলা মামলা করে নাজেহাল করেছিলেন, এই সরকারের আমলেও তারা হামলা মামলার শিকার হয়েছেন।
পরবর্তীতে আমাদের বারম্বার প্রচেষ্টায় সরকার তার ভুল বুঝতে পারেন এবং জামিন আবেদনের বিরোধিতা না করে সবার জামিনের সুযোগ করে দিয়েছেন। বয়স্ক অভিযুক্তদের অনলাইন হাজিরার ব্যবস্থা করে দিবেন বলেও জানিয়েছেন। সরকারকে সেজন্য ধন্যবাদ জানাই। তবে অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আগামী প্রোগ্রামগুলো যেন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে করা সম্ভব হয়, সেটা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
সরকারকে আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে অহিংস গণঅভ্যুত্থানের ৪ দফা দাবিগুলো পূরণেরও আহ্বান জানান তিনি। তা না হলে ২৯ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনে অহিংস গণঅভ্যুত্থানের নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দিবেন বলে জানান হাসনাত কাইয়ূম।
আগের সরকার আপনাদের পক্ষের আইন বানায়নি। এ সরকারও সে আইন না বানালে আপনারাই সারা দেশে নিজেদের ভোটে নিজেরা সংসদ সদস্য হয়ে নিজেদের পক্ষের আইনগুলো নিজেরা বানিয়ে নিবেন। সংগঠনের নেতৃত্বকে এ আহ্বান জানান হাসনাত কাইয়ূম।
সংবাদ সম্মেলনে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য ২৪-এর অভ্যুত্থানের একটা সেরা অর্জন হতে পারে পাচাররোধী আইন। সরকারকে এ লক্ষ্যে সর্বোচ্চ উদ্যোগী হবার আহ্বান জানিয়ে নিম্নোক্ত ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি—
১. অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়ন।
২. অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের নেতাদের নামে দায়ের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
৩. কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারনে কৃষকের মতামত নেওয়া।
৪. রাষ্ট্রের ক্ষমতা এবং সম্পদের উপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার।
এসব দাবিতে নিচের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি—
১. ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠে রংপুর বিভাগীয় সমাবেশ।
২. ৪ নভেম্বর, বুধবার, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার আলমপুর ৪নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ।
৩. ৮ নভেম্বর, শনিবার, সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ সদরের সার্কিট হাউস মাঠে ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমাবেশ।
৪. ১৩ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে চাঁদপুর সদরের বাবুরহাট সরকারি কলেজ মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ।
৫. ১৪ নভেম্বর, শুক্রবার, দুপুর ২টায় ৩০ মিনিটে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার বিকেনগর হাইস্কুল মাঠে সমাবেশ।
৭. ২৯ নভেম্বর, সকাল ১০টায় ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ। (স্থান পরে জানানো হবে)
ওইসব সমাবেশ সফল করতে সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে আহ্বান জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার।

2 hours ago
5









English (US) ·