মিয়ানমারের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ান। জোটটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কোনো প্রতিনিধিদল পাঠাবে না।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোববার রাতে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে ১১ সদস্যভুক্ত আসিয়ান নেতারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেন এবং শান্তি প্রক্রিয়ায় ‘অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা’ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, সহিংসতা বন্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংলাপ নির্বাচন আয়োজনের পূর্বশর্ত হতে হবে।
একটি কূটনীতিক সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, আসিয়ানের পক্ষ থেকে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে না, তবে ইচ্ছা করলে সদস্য রাষ্ট্রগুলো দ্বিপাক্ষিকভাবে পাঠাতে পারবে। আরেক কূটনীতিক নিশ্চিত করেছেন যে, আসিয়ানের পক্ষ থেকে যৌথ মিশন পাঠানো নিয়ে সদস্যদের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
সোলারিস স্ট্র্যাটেজিস সিঙ্গাপুরের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মুস্তাফা ইজজুদ্দিন বলেন, আসিয়ান পর্যবেক্ষক না পাঠানো জান্তার জন্য বড় ধাক্কা। এতে প্রমাণের কোনো সুযোগ থাকবে না যে ভোটটি স্বাধীন ও সুষ্ঠু হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সোমবার আসিয়ান সম্মেলনের পাশে বলেন, ২০২১ সালের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল দেশটিতে একের পর এক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। গ্রাম পোড়ানো, হাজারো মানুষ নিহত, লাখো বাস্তুচ্যুত এবং এখন সক্রিয় সংঘর্ষের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নির্বাচনটিকে ‘প্রহসন’ বলে উল্লেখ করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করেছে, জান্তা ‘নিপীড়ন ও ভিন্নমত দমন’ করছে এবং যারা নির্বাচন সমালোচনা করছে তাদের গ্রেপ্তার করছে।
বর্তমানে আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার এবং সর্বশেষ সদস্য ইস্ট তিমুর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ আগেই সতর্ক করেছিলেন, এই তথাকথিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসিয়ানের অংশগ্রহণ জান্তার প্রতারণাকে বৈধতা দেবে। এটা মিয়ানমারকে আরও পিছিয়ে দেবে এবং অন্যায়কে রক্ষা করবে।

3 hours ago
3









English (US) ·