আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

2 weeks ago 7

চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে নৃশংসভাবে নিহত সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম কোর্টের তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় দাখিলকৃত চার্জশিট গ্রহণ করেছে আদালত।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণযোগ্যতা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানিতে বাদী ও শহীদ আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বাদীপক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান রিপোর্টে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় এজাহারনামীয় ৩ জনকে এবং সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তদন্তে প্রাপ্ত সুকান্ত দত্তকে অব্যাহতির আবেদন করেন। সুকান্ত অস্ত্র, মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ ৮টি মামলার আসামি। প্রতিবেদনেও তাকে দুর্ধর্ষ আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি আদালতে আরও জানান, ঘটনার সঙ্গে সুকান্ত দত্তের সম্পৃক্ততা রয়েছে মর্মে তদন্ত রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার পর মূল হত্যাকারীদের সঙ্গে তার ছবি ভাইরাল হয়েছে। সুতরাং তাকে আসামি হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত রাখার আবেদন জানানো হয়। পরে আদালত এই আবেদন গ্রহণ করেন।

আদালত সুকান্ত দত্তকেসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন এবং পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেন।

এর আগে গত ১০ আগস্ট আদালত বাদীর উপস্থিতিতে রিপোর্ট শুনানির জন্য সমন জারি করেন। সেই আদেশ মোতাবেক সোমবার বাদী জামাল উদ্দিন আদালতে হাজির হন এবং তদন্ত প্রাপ্ত আসামি নারাজি দাখিল করবেন না মর্মে আদালতকে অবহিত করেন।

চার্জশিটভুক্ত ৩১ জনকে আসামি করে মামলার এজাহার দায়ের করা হলেও এজহারনামীয় গগন দাশ, বিশাল দাশ ও রাজকাপুর মেথরের তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় মামলার দ্বায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে নতুন করে চিন্ময় দাশসহ আরও ১০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করে মোট ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

বর্তমানে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ২০ জন আসামি গ্রেপ্তার আছেন এবং ১৮ জন পলাতক রয়েছেন।

চার্জশিটে বর্ণিত আসামিদের মধ্যে রয়েছে- চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাশ, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাশ, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাশ।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা দায়ের হয়।

এমআরএএইচ/এনএইচআর/জেআইএম

Read Entire Article