আইফোন ১৭ সিরিজ লঞ্চ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। এ ঘোষণার পর নতুন মডেলের অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব। তবে বিশ্ব বাজারের মতো বাংলাদেশের বাজারে এখনো চলছে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাপট। রাজধানীর বড় বড় শপিংমল, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আর বিভিন্ন মোবাইল মার্কেটে এই মডেল ক্রেতাদের কাছে এখনো জনপ্রিয়। ভেরিয়েন্ট ও স্টোরেজভেদে দামের তারতম্য থাকলেও চাহিদা কিন্তু কমেনি।
অফিশিয়াল সেট তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হয়। তাই লাগেজের মাধ্যমে আনা আনঅফিশিয়াল সেটের প্রতি ঝোঁক ক্রেতাদের। আছে ফ্রেশ কন্ডিশনের ব্যবহৃত আইফোনের চাহিদাও।
জানা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাজারে আসার পর অফিশিয়াল আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের ২৫৬ জিবির দাম ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৯ টাকা, ৫১২ জিবির দাম ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৯৯ টাকা ও ১ টেরাবাইটের দাম ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৯ টাকা। অন্যদিকে আনঅফিসিয়াল আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স ২৫৬ জিবির দাম ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ৫১২ জিবির দাম ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। ১ টেরাবাইটের দাম ২ লাখ ৩ হাজখর টাকা।
তবে বর্তমানে দামে পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। জনপ্রিয় কিছু মোবাইল ফোন বিক্রেতার দেওয়া তথ্যমতে, আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স অস্ট্রেলিয়ান ভেরিয়েন্টের ২৫৬ জিবির দাম ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ৫১২ জিবি স্টোরেজের দাম ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ টাকা। ১ টেরাবাইটের দাম ২ লাখ ৩ হাজার টাকা।
অন্যদিকে জাপানি ভেরিয়েন্টের ২৫৬ জিবির দাম ১ লাখ ৫০ হাজার, ৫১২ জিবির দাম ১লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিঙ্গাপুর কিংবা ইউএই ভেরিয়েন্টের ২৫৬ জিবির দাম ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ৫১২ জিবির দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা ও ১ টেরাবাইটের দাম ২ লাখ ২ হাজার টাকা। আর এই সব ফোন কেনার ক্ষেত্রে থাকছে এক বছরের অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি।
এছাড়াও বিভিন্ন মোবাইল মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম শুরু ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে। আবার কোথাও দাম শুরু হয় ১ লাখ ৫৪ হাজারে। জানা যায়, ভেরিয়েন্ট ও স্টোরেজ সংক্রান্ত কারণেই এই পার্থক্য। এছাড়াও ৭ দিন থেকে ১০ দিনের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি, কোথাও এক বছর বা দুবছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি কিংবা লাইফ টাইম সার্ভিস ওয়ারেন্টির জন্য দামে এমন পার্থক্য হয়ে থাকে।
যাদের বাজেট এতো নেই তারা কিনছেন ফ্রেস কন্ডিশনের ব্যবহৃত আইফোন। এক দোকানীর তথ্যমতে, আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের ২৫৬ জিবি স্টোরেজের অস্ট্রেলিয়ান ইউজড ফ্রেস কন্ডিশনের আইফোনের দাম ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। অন্য একটি ভেরিয়েন্ট রয়েছে এর দাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সঙ্গে থাকছে সাত দিনের রিপ্লেসমেন্ট ও দু বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি।
‘আমি বাজেটের কারণে ফ্রেশ কন্ডিশনের ইউজড আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স কিনেছি’ কথাগুলো বলছিলেন শুভ আহমেদ নামের একজন আইফোন ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘দাম আগের তুলনায় কমে এসেছে, বিশেষ করে যারা অল্প ব্যবহৃত ফোন খুঁজছেন তাদের জন্য। যদিও দাম কমেছে, তবে সার্ভিস ওয়ারেন্টি থাকায় নিতে সাহস পেয়েছি। আমার মনে হয়, নতুন মডেল লঞ্চের পর ইউজড আইফোনের চাহিদা আরও বাড়বে এবং দাম মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে আসবে।’
কোথাও কোথাও অনলাইনে কেনাকাটা কিংবা নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ড ব্যবহারে থাকছে ডিসকাউন্ট সুবিধা। বিক্রেতারা বলছেন, সীমিত সময়ের জন্য অনলাইন ট্রানজ্যাকশনে অতিরিক্ত ছাড় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও আমাদের এখানে এক্সচেঞ্জ অফার চলছে। ফ্রেশ কন্ডিশনের আইফোন ১৪/১৫ প্রো ম্যাক্স দিয়ে দিলে নতুন মডেলে কিছুটা ছাড় পাবেন ক্রেতারা।
আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দামের বাজার বর্তমানে ওঠানামা করছে। বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট ও স্টোরেজ, অফিসিয়াল বা আনঅফিশিয়াল সেট, অনলাইন ডিসকাউন্ট, এক্সচেঞ্জ অফার এবং সার্ভিস ওয়ারেন্টি অনুযায়ী দাম একই মুহূর্তে ভিন্ন হতে পারে। তাই ক্রেতাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কেনার আগে বর্তমান বাজার যাচাই করা। সঠিক ভেরিয়েন্ট ও নির্ভরযোগ্য স্টোর বা প্ল্যাটফর্ম থেকে দাম দেখে সিদ্ধান্ত নিলে ক্রেতা মূল্য এবং নিরাপত্তা দুই দিকেই নিশ্চিত থাকতে পারবেন।
নতুন আইফোন ১৭ এর দাম উঁচুতে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, ১৬ প্রো ম্যাক্স বাজারে এখনো শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। এর শক্তিশালী প্রসেসর, উন্নত ক্যামেরা আর দীর্ঘমেয়াদি সফটওয়্যার আপডেটের নিশ্চয়তা ক্রেতাদের আস্থা বাড়িয়েছে। তাই যারা এখনই আপগ্রেড করতে চান, তাদের জন্য বাজারের এই ওঠানামার মধ্যেও আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ পছন্দ।
আরও পড়ুন
কেএসকে/এমএস