মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নিখোঁজের তিন দিন পর একটি পুকুর থেকে শিশু শ্রেণিতে পড়ুয়া ফাতেমা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে সিরাজদিখান থানা পুলিশ রশুনিয়া ইউনিয়নের রশুনিয়া গ্রামের ব্যাঙ্গ দিঘী নামক পুকুর থেকে শিশু ফাতেমা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে।
শিশু ফাতেমা আক্তার উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব রশুনিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শহিদুল ইসলামের মেয়ে এবং রশুনিয়া মাহমুদিয়া নূরানীয়া মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। এর আগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব রশুনিয়া গ্রামের বাড়ির পাশে ওয়াজ মাহফিলে এসে ফাতেমা নিখোঁজ হয়।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে শিশুটির বাড়ির পাশে ওয়াজ মাহফিল চলছিল। খালাতো বোনের সঙ্গে বিকেলে সেখানে যায় সে। মাহফিলে বিভিন্ন পণ্যের অস্থায়ী দোকান বসেছিল। খালাতো বোন চলে আসতে চাইলে সেখানে থাকার বায়না করে শিশুটি। একপর্যায়ে শিশুটিকে রেখে চলে আসে তার বোন। সেখান থেকে নিখোঁজ হয় শিশুটি। এ ঘটনায় বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ফাতেমার মা বিলকিস বেগম বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় মামলা করেন।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শিশুর স্বজনরা জানতে পারেন, শিশু ফাতেমাকে ফ্রিতে আইসক্রিম খাওয়ায় উত্তর তাজপুর গ্রামের নাহিদ খানের ছেলে আইসক্রিম বিক্রেতা সাব্বির খান। মঙ্গলবার রাতেই এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সাব্বির সন্দেহজনক জবাব দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে পিটুনি দেন এলাকার লোকজন। পরে সাব্বিরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মামলায় সাব্বিরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে ঘাতক সাব্বির। পরে মরদেহ বাড়ি পাশের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। এ সংবাদে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উত্তেজিত জনতা সাব্বিরের বাড়িতে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে।
সিরাজদিখান থানার ওসি শাহেদ আল মামুন বলেন, নিহত শিশুর মা বিলকিস বেগম বুধবার বাদী হয়ে আইসক্রিম বিক্রেতা ঘাতক সাব্বিরকে আসামি করে মামলা করেন। সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা শেষে হত্যার দায় স্বীকার করে লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয় সাব্বির।
তিনি আরও বলেন, সাব্বিরের তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে তাজপুর গ্রামের ব্যাঙ্গ দিঘী পুকুর থেকে ফাতেমার মরদেহ উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।