‘প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে’
৫ আগস্টের পর দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। এজন্য সেনাবাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ঢাকা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ বিশ্বাস সাধনের সঞ্চালনায় সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাড. সুব্রত চৌধুরী, জেএল ভৌমিক, সভাপতি বাসুদেব ধর, সহসভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তাপস কুমার পাল ও গোপাল দেবনাথ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল।
ঢাকা বিভাগের ১৪টি জেলা ও মহানগর কমিটির প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন উপজেলার নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা বলেন, এক গভীর হতাশা ও ক্ষোভ হিন্দু সম্প্রদায়কে গ্রাস করেছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা ছিল, দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে চলা সাম্প্রদায়িক হামলা, বৈষম্য ও নির্যাতন-নিপীড়নের অবসান হবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি নির্মূল হবে। কিন্তু তা হয়নি, বরং আরও গভীর অন্ধকার গ্রাস করে হিন্দু সম্প্রদায়কে। এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের রক্তবীজ থেকে গড়ে ওঠা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, হিন্দু সম্প্রদায় উঠে দাঁড়ায়।
তারা আরও বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিজয়ের পর হিন্দু সম্প্রদায় মনে করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের ভূলুণ্ঠিত চেতনা প্রতিষ্ঠিত হবে। বৈষম্য-বিভেদের অবসান ঘটবে এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ফিরে পাবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এক পরিবার গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায় এক গভীর নৈরাজ্যের শিকার হয়।
রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে তাদের ওপর হামলা শুরু হয়। বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। কোথাও কোথাও হত্যার ঘটনা ঘটে। চাঁদাবাজি, অপহরণ এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ সময় সেনাবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ায়, অপশক্তির তৎপরতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন আশা সঞ্চারিত হয়েছে। সেনাবাহিনীর উজ্জ্বল ভূমিকার জন্য সভায় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও অভিবাদন জানানো হয়।
এ প্রতিনিধি সভা ছিল বিভাগীয় পর্যায়ে পূজা উদযাপন পরিষদের শেষ সভা। এর আগে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর ও চট্টগ্রামে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়।