আইসিএফপি সম্মেলন শুরু, বস্ত্র-পলিমার শিল্পে টেকসই উদ্ভাবনে জোর

3 hours ago 4

রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফাইবার ও পলিমার সম্মেলন শুরু হয়েছে। এ সম্মেলনে বিশ্বখ্যাত গবেষক ও শিক্ষাবিদরা বাংলাদেশের বস্ত্র ও পলিমার শিল্পে টেকসই উদ্ভাবন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।

আয়োজকরা বলছেন, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন গবেষণা ও আন্তর্জাতিক গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দেশের পোশাকখাতকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আরও এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) ক্যাম্পাসে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সোসাইটি অব ফাইবার সায়েন্স, বাংলাদেশের আয়োজনে এবং ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি (আইএসইউ) ও বুটেক্সের সহযোগিতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটি অব ফাইবার সায়েন্স বাংলাদেশের সভাপতি এবং জাপানের শিজুওকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম এ বারিক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পলিমার খাতকে বিশ্বমানের গবেষণা ও প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত করতে এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশীয় শিক্ষার্থী ও গবেষকরা এখানে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পাচ্ছেন, যা শিল্পখাতকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নেবে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাপান ফাইবার সোসাইটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স টোকিওর অধ্যাপক ড. তাকেশি কিকুতানি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। টেকসই প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব ফাইবার গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াতে পারলে এ খাতের সম্ভাবনা আরও বিস্তৃত হবে।

আইসিএফপি সম্মেলন শুরু, বস্ত্র-পলিমার শিল্পে টেকসই উদ্ভাবনে জোর

যুক্তরাষ্ট্র ফাইবার সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ক্যারোলিন এল শাওয়ার বলেন, বর্তমান বিশ্বে ফাইবার ও পলিমার শুধু বস্ত্র শিল্পেই সীমাবদ্ধ নয় বরং চিকিৎসা, পরিবেশ সুরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তিতেও বড় অবদান রাখছে। বাংলাদেশ এ বহুমাত্রিক গবেষণায় অংশ নিলে বিশ্বে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আজ বিশ্বমানের গবেষণার সাথে নিজেদের যুক্ত করতে চায় উল্লেখ করে বুটেক্স উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, বিশেষ করে জাপানের মতো উন্নত গবেষণার দেশগুলোর সঙ্গে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের নিয়মিত কলাবর্ষণ ও যৌথ গবেষণার সুযোগ তৈরি হলে টেক্সটাইল ও পলিমার খাত নতুন মাত্রা পাবে। আমরা চাই এই সম্মেলনের মাধ্যমে জাপান ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে উঠুক।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএসইউয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাশেম, আইএসইউ কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এইচটিএম কাদের নেওয়াজ, ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইইউবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, শিক্ষক ও শিল্প উদ্যোক্তারা।

সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে টেকসই বস্ত্র, পরিবেশবান্ধব ও পুনর্ব্যবহৃত তন্তু, ন্যানো-তন্তু, ইলেকট্রনিক ফাইবার, চিকিৎসাবিষয়ক বস্ত্র, মসলিন, জিও টেক্সটাইলস, কার্বন ও কাঁচের তন্তু, স্পিনিং, তাঁত প্রযুক্তি, ভেজা প্রক্রিয়াকরণ, পলিমার উৎপাদন, তন্তুর বৈশিষ্ট্য, কম্পোজিটস, আরএমজি এবং শিল্প খাত সম্পর্কিত উদ্ভাবন।

আয়োজকরা জানান, এ আন্তর্জাতিক আসর শুধু নতুন গবেষণার দ্বারই উন্মোচন করবে না, বরং শিল্পখাতের জন্য নীতি-প্রস্তাবনা, উদ্ভাবনী পণ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তি গড়ে তুলবে। এরমধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পলিমার শিল্প বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

এএএইচ/এমএএইচ/এএসএম

Read Entire Article