রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে সরকারের গ্যারান্টিতে দেওয়া তিন হাজার কোটি টাকা ঋণে সুদহার কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রথমে ১০ শতাংশ হারে সুদ নির্ধারণ হলেও তা আইসিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবু আহমেদ বলেন, প্রথমে যে ১০ শতাংশ সুদের হার ধরা হয়েছিল তা অনেক বেশি ছিল। এত চড়া সুদে ঋণে নেওয়া আরও উল্টো বোঝা। তাই আইসিবি থেকে এই সুদ হার কমানোর জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেটা আমলে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তা কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সুদ হার ৪ শতাংশ করায় তা অনেক ভালো হয়েছে। এখন আর এই ঋণ বোঝা মনে হবে না। এই ঋণের প্রাপ্ত অর্থের ৬০ শতাংশ ঋণ পরিশোধ করা হবে এবং ৪০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার একটা আলোচনা চলছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি।
জানা যায়, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও ঋণশোধের জন্য সভরেন গ্যারান্টির বিপরীতে আইসিবিকে ১০ শতাংশ সুদে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ১০ শতাংশ সুদ অনেক বেশি অভিহিত করে ৪ শতংশ করার প্রস্তাব জানায় আইসিবি। এবার সুদের হার কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করে আইসিবির প্রস্তাব অনুমোদন করে।
এর আগে ১৩ নভেম্বর আইসিবিকে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারি নিশ্চয়তা বা সভরেন গ্যারান্টি প্রদান করে। সেই সভরেন গ্যারান্টির বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে।
এরপর ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক আইসিবিকে ৩ হাজার টাকার ঋণের চিঠি প্রেরণ করে। চিঠিতে ঋণের সুদহার ধার্য্য করা হয় ১০ শতাংশ। ঋণের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় দেড় বছর। কিন্তু চড়া সুদে দেড় বছরের জন্য ঋণ নিয়ে আইসিবির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে বলে মনে করেছে সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ।
এ জন্য ২৮ নভেম্বর তিনি সুদের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠান। এর প্রেক্ষিতে সুদের হার কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করে আইসিবির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আইসিবিকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছিল, ওই ঋণ নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ করবে আইসিবি। এই টাকা তারা শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা আনয়ন ও উচ্চ সুদে নেওয়া তহবিল পরিশোধে ব্যবহার করবে।
এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইসিবির অনুকূলে দেওয়া ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ বা ঋণের ওপর আরোপিত সুদ বা সুদাসল পরিশোধে আইসিবি ব্যর্থ হলে সরকার তা পরিশোধ করবে।