পাঁচ বছর আগে নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন এলাকার উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা হত্যা মামলায় একই উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাজল মোল্লাসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২১ জনকে খালাসের রায় দেন আদালত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. রফিকুল ইসলামের আদালত এই রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন, সেতু মোল্লা, লিংকু শেখ, সিরাজুল ইসলাম ওরফে শিপুল মোল্লা, লিঠু মোল্লা ও তপু খান ওরফে হাশিব খান। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন, তৈয়েবুর গাজী, হুমায়ুন মোল্লা, লিমন মোল্লা, হৃদয় খান, টনি মোল্লা, সোহাগ মোল্লা, হাসমত মোল্লা, নজরুল মোল্লা, রবি মোল্লা, আবুজর মোল্লা ও সম্রাট মোল্লা। এদের মধ্যে প্রথম সাতজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। অন্য চার আসামিকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং ২০০ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৭ দিনের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়াও, এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২১ জনকে খালাসের রায় দেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডালিয়া পারভীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিন রায় ঘোষণার পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ায় বিচারকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন নিহতের স্বজন ও আসামিদের হামলায় ভুক্তভোগীরা। তারা বিচারককে আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে আদালতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দোনলা বন্দুক, শটগান, পিস্তল, রামদা, চাপাতি, শাবল, লোহার রড, হকিস্টিক, হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠিসহ মারাত্মক অস্ত্রে বেআইনিভাবে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা করে ভিকটিম মাসুদ রানাকে মারাত্মক জখম করেন। ভিকটিম মাসুদ রানাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় । ওই ঘটনায় মাসুদ রানার ছোট ভাই মামুন শেখ কালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছর ১ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলাটির বিচার চলাকালীন সময়ে অভিযোগপত্রভুক্ত ৪৭ জনের মধ্যে ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
এমআইএন/এএমএ/জেআইএম