পুরোদমে শীত শুরুর আগেই নীলফামারীতে আগাম আলুচাষের হিড়িক পড়েছে। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। এক সময় মঙ্গাপীড়িত জেলা হিসেবে পরিচিত এ জেলা এখন বদলে যাওয়া এক অঞ্চল। অক্লান্ত পরিশ্রম আর প্রচেষ্টায় স্বাবলম্ভী হচ্ছে মানুষ। কৃষিতে বিপ্লব চলছে জেলায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাঠেজুড়ে চলছে আগাম আলুচাষের ব্যাপক প্রস্তুতি। লাঙল টানছেন কেউ, কেউ ছিটাচ্ছেন সার, আবার কেউ রোপণ করছেন বীজ আলু। অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত চলবে এ কর্মযজ্ঞ। মৌসুমের প্রথম দিকে এ আলু উৎপাদন শেষে বাজারে উঠলে ভালো দাম পাওয়া যাবে আশা কৃষকদের।

জেলার জমি উঁচু ও বালু মিশ্রিত হাওয়ায়, বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আগাম আলুচাষে তেমন লোকসানের ভয় থাকে না। মৌসুমের প্রথম দিকে ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে আলু উৎপাদন হলে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমনটাই আশা কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এক কেজি নতুন আলু বাজারে ৬০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে পারে। তখন বাজারে চাহিদাও প্রচুর থাকে। ঢাকার বিভিন্ন বাজার থেকে বড় বড় পাইকারি মহাজনরা এসে আগাম বায়না করে যান। পরে মাঠ থেকে আলু কিনে নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। এ দাম পেলে আলু বিক্রি করে গত বছরের লোকষান পুষিয়ে নিয়ে লাভবান হওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:
হিমাগারের আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক-ব্যবসায়ী
‘দাম বাড়লে সাংবাদিক-প্রশাসন হাজির, কমলে কাউকে দেখি না’
উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন মিয়া বলেন, তিনি ৪০ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করেছেন। গত বছর দাম না পেলেও তার আশা মৌসুমের শুরুতে আগাম আলু মাঠ থেকে তুলতে পারলে ভালো লাভ হবে।
‘গত মৌসুমে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকরা হতাশ হন। তবে এবার তারা আগাম ধান কেটে আলুচাষে মন দিয়েছেন। আমরা তাদের নানা পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। বাজারে আগাম আলু তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।’
একই গ্রামের কৃষক ফিরোজ আলী বলেন, আগাম আলুচাষে ক্ষতির ভয় থাকে না। এছাড়া এখানকার মাটি আলুচাষে অনুকূল হওয়ায় আবাদ ভালো হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর রহমান বলেন, গত মৌসুমে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকরা হতাশ হন। তবে এবার তারা আগাম ধান কেটে আলুচাষে মন দিয়েছেন। আমরা তাদের নানা পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। বাজারে আগাম আলু তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারেও জেলায় আগাম প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলুচাষ হবে। এর মধ্যে শুধু কিশোরগঞ্জ উপজেলায় চাষ হবে ৬ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে।
আমিরুল হক/এমএন/এমএস

2 days ago
9








English (US) ·