চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুমিষ্ট আম দেশজুড়েই সমাদৃত। দেশের অনান্য জেলায় আম কেনাবেচা হলেও এখনও শুরু হয়নি এ জেলায়। তবে দেশের বৃহত্তম আমবাজার কানসাটে আমের আড়ত তৈরি ও মেরামতের কর্মযজ্ঞ চলছে পুরোদমে। জুনের প্রথম সপ্তাহ পরেই বাজারে আম আসতে শুরু করবে এমনটাই আশা কৃষি বিপণন কর্মকর্তাদের।
সরেজমিনে কানসাটে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে এখনও আম বেচাকেনা না শুরু হলেও আড়তদাররা আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউবা নতুন করে আড়ত তৈরি করছেন। আবার কেউ আগের আড়তের ঘরগুলো গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেশিরভাগ আড়তগুলো টিনের চালা দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।
আড়তদাররা জানান, প্রতিবছরই আমের আড়ত প্রস্তুতের কাজ হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। আবাহাওয়ার কারণে এবার আম একটু দেরিতে পাকছে। তবে খুব শিগগির বাজারে আম বেচাকেনার কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। গতবাররের তুলনায় এবার আমের ফলন কম হওয়ায় ব্যবসা ভালো হবে বলে দাবি তাদের।
শিবগঞ্জের শ্যামপুর-বাবুপুর এলাকার শরীফুল ইসলাম প্রায় ১৫ বছর ধরে আম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, কিছু কিছু বাগানে আম পাকতে শুরু করেছে। যার কারণে এখন থেকেই আড়ত মেরামত করা হচ্ছে। শীঘ্রই কানসাটের বাজার আমে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে অনান্য জেলাতেও আম উৎপাদন বেড়ে গেছে। ফলে ওই সব জেলাতেও আমের আড়ত তৈরি করা হচ্ছে।
মামুন আলী নামে আরেক আড়তদার জাগো নিউজকে বলেন, গতবছর এ আড়তে প্রায় কয়েক কোটি টাকার আমের ব্যবসা করেছি। তখন আয়ও হয়েছিল আশানুরুপ। দীর্ঘদিন ঘরটি ব্যবহার না করায় টিনের কিছু অংশ ছিদ্র হয়েগেছিল। সেজন্য আড়ত-ঘর মেরামত করছি।
তিনি আরও বলেন, এখানকার আম সবার চেয়ে সেরা। সেজন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্য এলাকার আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বলে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কানসাট এলাকার আম এখনো বাজারে আসেনি। তবে শীঘ্রই বাজারে আসবে এ এলাকার সুস্বাদু পরিপক্ব আম।
মুক্তা মিয়া নামে এক শ্রমিক জানান, কানসাটের আড়তের জন্য ঘর তৈরি ও মেরামতের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে অনেকের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু বাজারে আম আসার অপেক্ষা। কয়েকদিনের মধ্যে কানসাটে আম বাজার জমজমাট হয়ে উঠবে।
কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, বাজারে এখনও আম বেচাকেনা শুরু হয়নি। তবে ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খুব দ্রুতই আম বেচাকেনা শুরু হবে।
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোকাব্বের আলম নাঈম জাগো নিউজকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম জুনের প্রথম সপ্তাহের পরই বাজারে আসতে পারে। গতবারের তুলনায় এবার আমের ফলন কম। ফলে আমের দাম বাড়তে পারে।
চলতি বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলায় ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হচ্ছে। এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ হাজার টন বেশি।
সোহান মাহমুদ/এনআইবি/এএসএম