আজ দিন-রাত সমান, কীভাবে হলো?

1 hour ago 2

আজ দিন-রাত সমান। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার ১২ ঘণ্টা রাত, ১২ ঘণ্টা দিন। ভাবছেন হয়তো এটা নতুন কোনো খবর নাকি? প্রতিদিনই তো রাত দিন ১২ ঘণ্টা করে ২৪ ঘণ্টা। হ্যাঁ, ঠিক যে ২৪ ঘণ্টায় ১ দিন। কিন্তু সেই ২৪ ঘণ্টার ১২ ঘণ্টা দিন এবং ১২ ঘণ্টা রাত নয়। কখনো রাত বড় হয় কখনো দিন বড়।

বছরের শুধু দুটি দিন ২১ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আজকের দিনটিতে রাত-দিন সমান হয়। যা সত্যিই অবাক করা এক বিষয়! এমনকি এটি পৃথিবীর সব স্থানেই দিন-রাত সমান হয়। এ সময় (দিন) সূর্য বিষুবরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। যাকে বলা হয় ভারনাল ইকুইনক্স। এটা ল্যাটিন ভাষার শব্দ। এর ফলে পৃথিবীর উভয় গোলার্ধেই দিনের দৈর্ঘ্য ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান হয়ে যায়।

বাস্তবে সূর্যের কৌণিক আকার ও বায়ুমণ্ডলে আলোর প্রতিসরণের কারণে দিন ও রাত একেবারে সমান হয় না। তবে দিন-রাত ১২ ঘণ্টার খুব কাছাকাছি থাকে। এ সময়ের পর থেকে উত্তর গোলার্ধে সূর্য ক্রমে দক্ষিণ থেকে উঠে ও দক্ষিণে হেলে অস্ত যায়। এ সময় থেকে গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে।

২২ সেপ্টেম্বর সূর্য তার দক্ষিণ গোলার্ধের অবস্থান শেষ করে উত্তর গোলার্ধের দিকে যাত্রাকালে রাতের শেষের দিকে বিষুবরেখার উপর অবস্থান নেয়। তাই পরদিন অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর আবারো পৃথিবীর উভয় গোলার্ধের দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য সমান হয়।

পৃথিবী একটি উল্লম্ব অক্ষ থেকে আনুমানিক ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে আছে। সূর্যের চারপাশে একটি পূর্ণ আবর্তন করতে পৃথিবীকে ৩৬৫ দিন ও ৬ ঘণ্টা (৩৬৫.২৫ দিন) সময় লাগে। এ কারণেই প্রতি চার বছরে একটি লিপ ইয়ার হয়।

আজ দিন-রাত সমান, কীভাবে হলো?

গ্রীষ্মকালে সূর্য উত্তর-পূর্ব আকাশে উদিত হয় ও উত্তর-পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। দিন বড় হয় ও রাত ছোট হয়ে যায়। গ্রীষ্মের অয়নায়নে সূর্য সৌর দুপুরে (১টা নাগাদ) আকাশে তার সর্বোচ্চ ও উত্তরতম বিন্দুতে পৌঁছায়। এটি বছরের সবচেয়ে সরাসরি সৌর বিকিরণ প্রদান করে, যার ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠ আরও গরম হয়।

অন্যদিকে শীতকালে সূর্যোদয় হয় দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে ও সূর্যাস্ত হয় দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে। তাই তখন দিন ছোট ও রাত বড় হয়। তখন দুপুরে সূর্য আকাশের সর্বনিম্ন ও দূরতম দক্ষিণে অবস্থান করে। শীতের প্রথম দিনে বছরের সবচেয়ে কম সরাসরি সৌর বিকিরণ হয়। ফলে তাপমাত্রা আরও ঠান্ডা হয়। কারণ তখন পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কম থাকে।

একটি গোলার্ধের শীতকালীন অয়নকাল হলো বছরের সবচেয়ে ছোট দিন এবং গ্রীষ্মকালীন অয়নকাল হল বছরের দীর্ঘতম দিন। এজন্য ২১ জুন দিনটি বছরের সবচেয়ে লম্বা দিন। অন্যদিকে ২১ ডিসেম্বর বছরের সবচেয়ে ছোট দিন, যা শীতের সূচনা করে।

মজার বিষয় হলো, সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার (পুরোপুরি বৃত্তাকার নয়)। তাই এটি প্রকৃতপক্ষে উত্তর গোলার্ধে শীতকালে জানুয়ারিতে (পেরিহেলিয়ন) সূর্যের সবচেয়ে কাছে ও উত্তর গোলার্ধের গ্রীষ্মকালে জুলাই মাসে (অ্যাফিলিয়ন) সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে।

সূত্র: ব্রিটানিকা, নিউইয়র্ক পোস্ট

কেএসকে/জেআইএম

Read Entire Article