আজ বাঁশের দিন

1 hour ago 6

আপনি কি জানেন, এমন এক উদ্ভিদ আছে যা দিনে প্রায় এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, আবার যার থেকে তৈরি হয় সাঁকো, ঝাড়ু, মাছ ধরার ফাঁদ, এমনকি আধুনিক চেয়ার-টেবিলও?

বলছি বাঁশের কথা। গ্রাম-বাংলার জীবনে এর অবদান অপরিসীম, আর শহুরে জীবনে সৌন্দর্যের অংশ। বাঁশ আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এমনভাবে মিশে আছে যে আলাদা করে খেয়াল না করলেও প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে আমরা সবাই এর ওপর নির্ভর করি।

আজ বাঁশের দিন

আজ, ১৮ সেপ্টেম্বর, বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু ডে’। শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও, এই দিনটির পেছনে রয়েছে একটি ইতিহাস। ২০০৯ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বাঁশকে ঘিরে বৈশ্বিক সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারপর থেকেই প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের এই দিনে বাঁশ হয়ে ওঠে আলোচনার বিষয়।

বাংলাদেশে বাঁশ মানেই যেন গ্রামীণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘর বানানো থেকে শুরু করে সাঁকো, ঝাড়ু, মাছ ধরার ফাঁদ কিংবা খেলনা — সবখানেই বাঁশের ব্যবহার। মজার ব্যাপার হলো, বাঁশকে অনেকে ‘গরিবের লোহা’ বললেও এখন এটি আধুনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন আর পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনেরও অংশ হয়ে উঠেছে। শহুরে ক্যাফের চেয়ার–টেবিল থেকে শুরু করে হাতে বানানো বাঁশের ব্যাগ পর্যন্ত।

আজ বাঁশের দিন

বাঁশ এক দিনে প্রায় এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে — যা পৃথিবীর দ্রুততম বৃদ্ধি পাওয়া উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। আবার পান্ডার প্রধান খাবারও বাঁশের কচি পাতা। ভাবুন তো, পৃথিবী থেকে বাঁশ হারিয়ে গেলে শুধু আমাদের সাঁকো নয়, পান্ডার মুডও একেবারে অফ হয়ে যাবে!

পরিবেশবিদরা অবশ্য বাঁশকে নিয়ে একেবারে সিরিয়াস। কারণ এটি কার্বন শোষণ করে বাতাসকে পরিচ্ছন্ন রাখে, আর মাটিকে আঁকড়ে ধরে ভূমিক্ষয় ঠেকায়। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে বাঁশ কেবল গ্রামীণ জীবনের বন্ধু নয়, বরং পৃথিবী বাঁচানোর এক সৈনিক।

আজ বাঁশের দিন

তবে সত্যি বলতে, আমাদের জীবনে বাঁশের স্থান এতটাই মজবুত যে আলাদা করে দিবস পালনের দরকার আছে কিনা—তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। গ্রামের কারও সঙ্গে আড্ডা দিলেই শোনা যাবে, জীবনের প্রতিটি খুঁটিনাটি কাজে বাঁশ কেমনভাবে মিশে আছে।

তবুও, ১৮ সেপ্টেম্বর একটু মজা করে বলা যায়— আজ বাঁশের দিন, তাই বাঁশের কদর করুন। কারণ বাঁশ শুধু কাঠামো নয়, আমাদের সংস্কৃতির অংশ, হাস্যরসেরও অংশ।

এএমপি/জিকেএস

Read Entire Article