আত্মহত্যায় সাহায্যের অভিযোগে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা

7 hours ago 4
আত্মহত্যায় সহায়তার অভিযোগে ওপেনএআই চ্যাটজিপিটি এবং কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম আল্টমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক বাবা-মা। তারা দাবি করেছেন, ওপেনএআইয়ের চ্যাটবট তাদের সন্তানের আত্মহত্যায় সাহায্য করেছে। তারা বলেছেন, আত্মহত্যার পদ্ধতি এবং চিরকুট লেখার ক্ষেত্রেও চ্যাটজিপিটি তাকে সহায়তা করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ বছর বয়সী অ্যাডামকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার পদ্ধতি সম্পর্কে জানিয়ে সাহায্য করেছিল ও তার আত্মহত্যার নোটের প্রথম খসড়া লিখতেও সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়র কোর্টে গতকাল মঙ্গলবার এ মামলা করা হয়। মৃত্যুর মাত্র ছয়মাস আগে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার শুরু করে। এই সময়ের মধ্যেই সে চ্যাটবটের সঙ্গে নিজেকে এতটাই জড়িয়ে ফেলে যে, সে শুধু চ্যাটজিপিটিকেই নিজের একমাত্র বন্ধু হিসেবে ভাবা শুরু করে, যে তাকে বোঝে। এর প্রভাবে অ্যাডামের বাস্তব জীবনের সম্পর্ক, যেমন পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের সঙ্গে তার সম্পর্ক বদলে যায়। অর্থাৎ তার বাস্তব জীবনের মানুষদের সঙ্গে সম্পর্কের জায়গা চ্যাটজিপিটি দখল করে নেয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, অ্যাডাম চ্যাটজিপিটিকে একবার বলেছিল, সে তার ফাঁসের দড়িটি তার রুমে রাখতে চায়। যেন কেউ এটি দেখে এবং তাকে আত্মহত্যা থেকে রক্ষার চেষ্টা করে। কিন্তু চ্যাটজিপিটি তাকে রুমে ফাঁসির দড়িটি না রাখতে অনুৎসাহিত এবং আত্মহত্যার চিন্তাভাবনার বিষয়টি সবার থেকে গোপন রাখতে বলেছিল। আরও পড়ুন : প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ, ২৪৫০ কোটি টাকার ক্ষতি শুধু অ্যাডামের পরিবারই নয়; যুক্তরাষ্ট্রের অনেকেই জানাচ্ছেন, এআই চ্যাটবট ব্যবহার করে তাদের ছেলেমেয়েরা নিজেদের ক্ষতি করছে এবং কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। এ নিয়ে অনেকে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো এখনো চলছে। তবে কোম্পানিটি বলেছে, তারা ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করতে চায়। এর অংশ হিসেবে কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। চ্যাটবট নিয়ে বিশ্বব্যাপী ইতোমধ্যে বেশ জোরালো শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ এআই প্রোগ্রামগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন তারা সবসময় ব্যবহারকারীর প্রতি সহনশীল ও বন্ধুর মতো আচরণ করে। এতে করে অনেক মানুষ এই চ্যাটবটগুলোর সঙ্গে আবেগপ্রবণভাবে জড়িয়ে পড়ছেন। এর ফলে তারা বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন এবং মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। প্রসঙ্গত, গত বছর ফ্লোরিডার মেগান গার্সিয়া নামে এক মা ‌‌‌‘ক্যারেক্টার’ নামের একটি এআই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার অভিযোগ, এই প্রতিষ্ঠানের চ্যাটবট ব্যবহার করে তার ১৪ বছরের ছেলে আত্মহত্যা করে। এর কিছুদিন পর আরও দুটি পরিবার একই অভিযোগ এনে মামলা করে। তারা জানায় ক্যারেক্টার এআই তাদের সন্তানদের যৌন ও নিজেদের ক্ষতি করার মতো ক্ষতিকর জিনিস দেখিয়েছে। ওপেনএআই সম্প্রতি ‘জিপিটি-৫’ চালু করেছে, যা এটির আগের মডেলের জায়গায় এসেছে। আগের মডেলটির সঙ্গে অ্যাডাম কথোপকথন করেছিল। তবে কিছু ব্যবহারকারী নতুন মডেলকে ভুল তথ্য প্রদান করা ও বন্ধুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের অভাবের কারণে সমালোচনা করেছেন। তবে, গত বছরের আগস্টে প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক করেছিল যে ব্যবহারকারীরা চ্যাটজিপিটির সঙ্গে তাদের ‘সামাজিক সম্পর্কের’ ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারেন। এতে ‘মানবিক সংযোগের প্রয়োজন কমে যাবে’ এবং এটি ব্যবহারকারীদের এ চ্যাটবটের ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাস স্থাপন করতে প্ররোচিত করবে।
Read Entire Article