আনসেলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি শ্রমিক শোষণের অভিযোগ

6 hours ago 3

অস্ট্রেলিয়ার দস্তানা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আনসেলের মালয়েশিয়ান সরবরাহকারী মেডিসেরামে বাংলাদেশি শ্রমিকদের শোষণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

ফেডারেল ট্রেজারিতে দায়ের করা এক অভিযোগে বলা হয়েছে, অন্তত ২২০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক মজুরি চুরি, জোরপূর্বক শ্রম, ঋণের ফাঁদ ও নির্বাসনের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন।

অভিযোগটি দায়ের করেছেন আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকারকর্মী অ্যান্ডি হল। তিনি দাবি করেছেন, শ্রমিকরা বাংলাদেশে নিয়োগ ফি বাবদ গড়ে প্রায় ৫ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, অনেক শ্রমিককে কয়েক মাস ধরে বেতন ও ওভারটাইম ভাতা দেওয়া হয়নি, কারও ভিসা নবায়ন করা হয়নি, আবার অভিযোগ তোলার কারণে অন্তত ৩৩ জন শ্রমিককে বরখাস্ত করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

একজন বাংলাদেশি শ্রমিক জানান, তাদের আবাসনে প্রতিটি কক্ষে ছয়জন করে থাকতে বাধ্য করা হতো।

অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আনসেল নিজেই স্বীকার করেছে যে মেডিসেরামে বেশ কিছু শ্রম মান-লঙ্ঘন শনাক্ত করেছে।

আনসেলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি শ্রমিক শোষণের অভিযোগ

তবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আরুমুগাম সুপ্পিয়াহ অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন ও ‘শ্রমিক কর্মীর ভয় দেখানোর কৌশল’ বলে দাবি করেন। তার ভাষায়, ‘মেডিসেরাম সব ধরনের স্থানীয় নিয়ম মেনে চলে, সমস্ত অভিযোগ নথিপত্র দিয়ে খণ্ডনযোগ্য।’

এ বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক দাসত্ব প্রতিরোধে অস্ট্রেলীয় কোম্পানিগুলোর আইনগত দায়িত্ব আরও জোরদার হওয়া উচিত। মানবাধিকার আইন কেন্দ্রের সহযোগী আইন পরিচালক ফ্রেয়া দিনশ মন্তব্য করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার আইন আরও কঠোর করতে হবে, যেন সরবরাহ শৃঙ্খলে শ্রমিক শোষণের মতো ঘটনা রোধে কোম্পানিগুলো বাধ্য থাকে।’

এর আগে ২০১৭ সালেও আনসেলের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ার কারখানায় শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। নতুন করে একই ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানটি আবারও তীব্র চাপে পড়েছে।

শ্রমিক অধিকারকর্মীদের মতে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি হবে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বড় করপোরেট আধুনিক দাসত্বের ঘটনা।

এমআরএম/এএসএম

Read Entire Article