শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ‘আপা’ বলায় রোগীর ওপর ক্ষেপে রুম থেকে বের করে দিয়েছেন এক চিকিৎসক। ‘আপা’ নয় তাকে ‘ম্যাডাম’ডাকতে হবে, বলেন ওই চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
শেরপুর পৌর শহরের নয়নী বাজার মহল্লার বাসিন্দা ভুক্তভোগী কাজী মাসুম জানান, দুপুর ২টার দিকে ১১ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়ার পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাই। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক অনন্যা জরুরি কিছু ওষুধ লিখে দেন। হাসপাতালে সরবাহ না থাকায় ওষুধগুলো বাইরে আনতে যাই। কিন্তু হাসপাতাল রোডের প্রায় ছয় সাতটি দোকান খুঁজেও একটি ওষুধ পাওয়া যায়নি। ফলে আবারও জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের ফিরে আসি। সেখানে গিয়ে দেখি আগের ডাক্তার অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে গেছেন। পরবর্তী ডিউটিতে আছেন চিকিৎসক মারজিয়া খাতুন। এসময় বিনয়ের সঙ্গে চিকিৎসক মারজিয়াকে আপু ডেকে বলি, ‘আগের চিকিৎসক যে ওষুধ দিয়েছিল সেখানকার একটি ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। সেটার পরিবর্রতে অন্য কোন ওষুধ দেওয়া যায় কিনা।’
এসময় মারজিয়া ‘আপু’ শব্দটি শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। উচ্চস্বরে বলেন, ‘আপু বলছেন কেন, ম্যাডাম’ ডাকতে সমস্যা কোথায়। আমি একজন মেডিকেল অফিসার। যান, বের হয়ে যান।’
এদিকে অসুস্থ মেয়ের কান্নাকাটি দেখে, রোগীর অভিভাবক মাসুম ফের বলেন, ‘আপু ডেকে কি দোষ করেছি। সেবাটা অন্তত দেন। কিন্তু এতেও সে আরও রাগান্বিত হয়ে কয়েক দফা ধমক দিয়ে তার রুম থেকে বের করে দেন।
এ বিষয়ে চিকিৎসক মারজিয়া বলেন, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারো সঙ্গে কোনো কথা বলবো না।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার তাহেরাতুল আশরাফি জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি, হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন। তবে আমাদেরকে অফিসিয়ালি অভিযোগ বা সরাসরি কথা বললে শনিবার আসতে হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার শাহিন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আপা-ভাই বলা আন্তরিকতার ব্যপার। এখানে আমরা সেবাদান করার মনমানুষিকতা নিয়ে এ পেশায় এসেছি। আজকের ঘটনাটি আমি এখনো শুনিনি। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।
মো: নাঈম ইসলাম/এএইচ/জিকেএস