আফগানিস্তানে বিমান হামলা পাকিস্তানের

2 hours ago 6
যুদ্ধবিরতি ভেঙে আফগানিস্তানে আবারও বড় বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। বিনা উসকানিতে পাকিস্তান নতুন করে এ হামলা চালায়। এ হামলায় ছয়জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান সংবাদমাধ্যম খামা প্রেস। সাম্প্রতিক সংঘাত থামিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছিল দুই দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী মুসলিম দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বুধবার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। এর আগে সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও বিমান হামলায় এক ডজনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটাই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতের দিকে পাকতিকা প্রদেশের একাধিক জায়গায় বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান অনির্দিষ্টকালের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানি সেনাদের এ হামলার পর আফগান সেনারাও পাল্টা হামলা শুরু করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। আফগান তালেবান সরকারের জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, পাকতিকার উরগুন ও বারমাল বিভাগে পাকিস্তানের বিমান হামলায় একাধিক নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন। পাকতিকার কমান্ডিং সেন্টার খামা প্রেসকে ছয়জনের মৃত্যু ও সাতজন আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেছে, বিনা উসকানিতে পাকিস্তান নতুন করে আবারও আফগানিস্তানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতের দিকে পাকিস্তানি ড্রোন আবাসিক এলাকায় বোমাবর্ষণ করে। এ হামলার আগে আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ‘অনির্দিষ্টকালের যুদ্ধবিরতির’ ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, উসকানি না দিলে আফগানিস্তান আর কোনো হামলা করবে না। কিন্তু এ যুদ্ধবিরতি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পাকতিকার সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ হামলার পরই আফগান সেনারা সীমান্তে পাল্টা হামলা শুরু করে। তারা সতর্কতা দিয়েছেন, এমনটি চলতে থাকলে এ দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘বিশ্বাসের অভাব’ রয়েছে, যা দুই দেশকে সংঘাতে জড়িয়েছে। তবে এতে অনেক সাধারণ মানুষ নিহত হচ্ছে; যা পরিস্থিতি খারাপ করে দিতে পারে। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান কাবুলের ক্ষমতায় ফিরলে পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক নেতারা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে তাদের স্বাগত জানিয়েছিলেন। ইসলামাবাদের ধারণা ছিল— তালেবান সরকার হবে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং দেশটির জন্য নিরাপত্তা-ঢাল হিসেবে কাজ করবে। কারণ, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই আফগান তালেবানকে নানা উপায়ে সহায়তা করছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক এখন ভেঙে পড়েছে। এ সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান তার বিমান বাহিনী দিয়ে আফগান রাজধানী কাবুলে হামলা চালিয়েছে— যা দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। পারস্পরিক প্রত্যাশার অমিল ও একে অপরের সামর্থ্যের প্রতি অসম্মান এখন সেই পুরোনো সম্পর্ক পুনরুদ্ধারকে আরও কঠিন করে তুলেছে। সূত্র : খামা প্রেস
Read Entire Article