আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৫০

4 hours ago 2

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) গভীর রাতে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং আরও প্রায় ৫শ জন আহত হয়েছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনবার আফটার শক অনুভূত হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আনাদোলুকে জানিয়েছেন যে, কুনার প্রদেশের নুর গাল, সাওকি, ওয়াটপুর, মানোগি এবং চাপা দারা জেলায় হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, নিহত ও আহতদের সংখ্যা চূড়ান্ত নয় কারণ কর্মকর্তারা এখনো অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

তিনি জানান, ভূমিধসের কারণে সাওকি জেলার দেওয়া গুল এবং নূর গুল জেলার মাজার দারা যাওয়ার রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উদ্ধারকারী দলগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে অসুবিধা হচ্ছে।

স্থানীয়রা এটিকে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পগুেলোর মধ্যে একটি বলে বর্ণনা করেছেন।
আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদও ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, দুঃখের বিষয়, আজ রাতের ভূমিকম্পে আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় কিছু প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মুজাহিদ বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং বাসিন্দারা উদ্ধার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত আছেন। তিনি জানিয়েছেন, জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রোববার আঘাত হানা ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বেশ কয়েক সেকেন্ড ধরে কম্পন টের পাওয়া গেছে। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

এক আফগান কর্মকর্তা বলেন, বলেন, এখনও প্রদেশের অনেক জেলায় আফটারশক অনুভূত হচ্ছে। কুনার প্রদেশের আরেক কর্মকর্তা বলছেন, ‘মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহ’।

তবে এই পর্যায়ে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দুর্গম এবং পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় কেউ সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারছে না। কিছু এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করছে না এবং অন্য অংশে ভূমিধস এবং বন্যার কারণে রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আফগানিস্তান ভূমিকম্প প্রবণ হওয়ার কারণে সেখানে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এটি এমন বেশ কয়েকটি ফল্ট লাইনের ওপরে অবস্থিত যেখানে ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে। ২০২২ সালে পূর্ব আফগানিস্তানে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে এক হাজার মানুষ নিহত এবং আরও তিন হাজার মানুষ আহত হয়। গত দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে এটাই ছিল সবচেয়ে মারাত্মক বিপর্যয়। ভূমিকম্পটি মাঝারি মাত্রার ছিল কিন্তু এতে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

টিটিএন

Read Entire Article