বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুনতাসির আল জেমি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের একদিন পর ৬ আগস্ট জেল থেকে পালান তিনি। এদিন তিনিসহ ২০২ জন বন্দি একসঙ্গে কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যান। তাদের মধ্যে ৮৭ জন মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ছিল।
আবরার হত্যা মামলা তিন নম্বর আসামি জেমি ময়মনসিংহের বাসিন্দা।
বিষয়টি এতদিন গোপন ছিল। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে কারা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, এ ঘটনায় ৬ আগস্ট কারা অধিদপ্তর কোনাবাড়ি থানাতে একটি মামলা করেছে। সেখানে পলাতক এ বন্দি সম্পর্কে বলা আছে।
তিনি বলেন, আবরার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি (কয়েদি নম্বর-৫১৭৭/এ) মুনতাসির আল জেমি (২৬) গত ৬ আগস্ট গাজীপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে গেছে। ঘটনার সময় ২০২ জন বন্দির সঙ্গে একত্রে কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে ৮৭ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিল। এ ঘটনায় গত বছরের ১৫ আগস্ট কোনাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়।
কারা অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা বলেন, সব কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে ৩৫ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ ৫১ জন বন্দিকে গ্রেফতার করে কারাগারের পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিকে গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, আবরার হত্যা মামলায় কারাগারের আগত বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত ২২ জন বন্দির মধ্যে বর্তমানে ২১ জন বন্দি কারাগারে আছে।
এর আগে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মুনতাসির আল জেমি জেলখানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি নিজের ফেসবুক আইডিতে জানান, আবরারের ছোট ভাই ফাইয়াজ। বিষয়টি আদালত ও বাদীপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আবরার ফাইয়াজ তার ফেসবুকে লিখেন, আবরার ফাহাদ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেমি জেলখানা থেকে পালিয়ে গেছে ৫ আগস্টের পরে। অথচ আমাদের জানানো হচ্ছে আজ, যখন ওর আইনজীবী কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে আসেননি তখন।
তিনি লিখেছেন, ফাঁসির আসামির তো কনডেম সেলে থাকার কথা ছিল, সে পালায় কীভাবে! পালানোর পরও এ তথ্য বাইরে না আসা তো এটাই প্রমাণ করে যে তাকে ধরতেও কোনো চেষ্টা করা হয়নি। পূর্বে থেকেই আরও ৩ জন পলাতক।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে শহীদ মিনারে প্রতিবাদ মিছিল করে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
টিটি/এমএএইচ/