আবু সাঈদের মৃত্যুর কারণ মাথার আঘাত নয়: ডা. রজিবুল

2 hours ago 3

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদের মৃত্যুর কারণ মাথার আঘাত নয় বলে জানিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. রজিবুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) তিনি সাংবাদিকদের জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি যে, আবু সাঈদের মৃত্যু মাথার আঘাতে হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবু সাঈদের মাথার আঘাতকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দাবি করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ঘুরছে। তবে এই তথ্য ভুল। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকলেও সেটি মৃত্যুর কারণ নয়।

ডা. রজিবুল বলেন, মাথায় কোনো অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বা হাড় ভাঙার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চাপে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মাথার আঘাতের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, প্রতিবেদনটি জোরপূর্বক কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। অবশেষে ৩০ জুলাই প্রতিবেদনটি চূড়ান্তভাবে দাখিল করা হয়।

ডা. রজিবুল বলেন, ‘আবু সাঈদের শরীরে অসংখ্য ছররার আঘাত ছিল, যা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঘটায়। তার অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা তার মৃত্যুর প্রধান কারণ। মাথার আঘাতের কারণে মৃত্যুর কোনো প্রমাণ নেই।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, যা ফরেনসিক চিকিৎসকদের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। এখন এটি একটি বিচারিক বিষয় এবং আমি আদালতে আমার ব্যাখ্যা দেবো।’

গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।

এ ঘটনায় ১৮ আগস্ট আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, রংপুর ডিআইজি আব্দুল বাতেন, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ৩০-৩৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।

আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরআগে ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায় অজ্ঞাতপরিচয় ২-৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং আবু সাঈদকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় দাবি করা হয়, আন্দোলনকারীদের গোলাগুলি এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে আবু সাঈদ নিহত হন।

জিতু কবীর/এসআর/এএসএম

Read Entire Article