আমরা পালাই না, আমরা মাফিয়া নই : বললেন তিনি

2 months ago 6
আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ আদালত এক রায়ে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ ডি কির্চনারের ছয় বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন। সে সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সরকারি পদ থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। এর ফলে তিনি কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ফার্স্ট লেডি এবং প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন দুর্নীতির অভিযোগে মঙ্গলবার (১০ জুন) তার বিরুদ্ধে এ রায় দেন আদালত।  আদালতের ঘোষণার আগেই এ ধরনের রায়ের আভাস ছিল। সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে সজাগ ছিলেন ফার্নান্দেজও। সোমবার (৯ জুন) দলের এক সভায় তার বক্তব্যে তা স্পষ্ট।  তিনি বলেন, আমাকে হয়তো জেলে যেতে হবে, কিন্তু মানুষ প্রতিদিন আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাবে। একজন ব্যক্তির গ্রেপ্তার ইতোমধ্যেই ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেলকে পরিবর্তন করবে না। আমরা মাফিয়া-ধাঁচের ডানপন্থিদের মতো নই, যারা তিন বছর ধরে পালিয়ে বেড়ায়। পেরোনিস্টরা এখানে আছি (আমরা পালাই না) এবং আমরা এখানেই থাকব। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এই বিস্ফোরক রায়ের ফলে ফার্নান্দেজের সমর্থকরা আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে এবং প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। তবে সরকার আর্জেন্টিনার ক্যারিশম্যাটিক কিন্তু বিতর্কিত নেতা ফার্নান্দেজকে গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকরে বদ্ধপরিকর।  আদালত আর্জেন্টিনার নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়কে ৭২ বছর বয়সী ফার্নান্দেজকে আটক রাখার জন্য একটি আটক কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। তার আইনজীবী কার্লোস বেরালদি বুয়েনস আইরেসের একটি টেলিভিশন স্টেশন সি৫এনকে জানিয়েছেন, তিনি ফার্নান্দেজকে তার বয়স বিবেচনা করে গৃহবন্দি অবস্থায় সাজা ভোগ করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। ফার্নান্দেজ দুই দশক ধরে আর্জেন্টিনার রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। দেশের প্রধান বামপন্থি জনতাবাদী আন্দোলনকে কির্চনারবাদ নামে পরিচিত করেন তিনি। ফার্নান্দেজের আট বছরের শাসনামলে (২০০৭-২০১৫) তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে। বিশেষ করে অর্থ ছাপিয়ে অবাধ রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের জন্য অর্থায়নের ফলে বিশাল বাজেট ঘাটতি এবং আকাশচুম্বী মুদ্রাস্ফীতির মুখে পড়ে আর্জেন্টিনা। সমালোচকরা ফার্নান্দেজের নীতিকে আর্জেন্টিনার বছরের পর বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করেন। এ ধারাবাহিক অর্থনৈতিক সংকট এবং দেশের ফুলে-ফেঁপে ওঠা আমলাতন্ত্রের প্রতি ক্ষোভ ২০২৩ সালের শেষের দিকে চরম জনরোষে পরিণত হয়। ফলস্বরূপ উগ্র জাতীয়তাবাদী জাভিয়ের মাইলি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ফার্নান্দেজ আদালতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিচারকদের দেশের অর্থনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিদের ‘পুতুল’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, তারা তিনজন পুতুল। যারা তাদের অনেক উপরে ক্ষমতাসীনদের হয়ে কথা বলছে। এটি বিরোধী দল নয়। এটি আর্জেন্টিনার সরকারের ঘনীভূত অর্থনৈতিক শক্তি। ফার্নান্দেজ বিচারকদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অভিযোগ করেছেন, প্রমাণ উপস্থাপনে তাকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি।
Read Entire Article