মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেছেন, এত বড় অন্যায়-অবিচার আর হতে পারে না। আমরা ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এগুলো দমাতে হবে।
আদালত বলেন, ধর্ষণের মতো পাশবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে এ বিষয়ে আমাদের সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিন আদালত মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির ছবি, ভিডিও যেসব গণমাধ্যম ও ব্যক্তি প্রকাশ-প্রচার করেছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি)সংশ্লিষ্টদের আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। পরে আদালতের নির্দেশে ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে রিট দায়ের করেন।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার (শিশুটি ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগে মামলা) তদন্ত শেষ করার পাশাপশি অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার জন্য নারী শিশু নির্যাতন ও দমন ট্রাইব্যুনালকে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রথামিক শুনানি নিয়ে রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন রিটটি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান শুনানিতে অংশ নেন।
- আরও পড়ুন
- সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে মাগুরার সেই শিশুটি
- ধর্ষণ-নির্যাতনের অভিযোগ জানাতে খোলা হচ্ছে ‘হটলাইন’
পরে আইনজীবীরা জানান, মাগুরার ভুক্তভোগী শিশুটির ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসি, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় সংবাদমাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বিধিনিষেধ সম্পর্কে বলা আছে। ১৪ ধারা ভঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তিন কার্যদিবসের মধ্যে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ধারাটির বিষয়ে দেশজুড়ে সবাইকে জানাতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ভুক্তভোগী শিশুটি ও তার ১৪ বছর বয়সী বড় বোনের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ জন্য ঢাকা ও মাগুর জেলা সমাজকল্যাণ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতেও বলা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিবাদীদের ১৭ মার্চ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এফএইচ/এসএনআর/জিকেএস