আলুর দামে গত বছরের বিপরীত চিত্র এবার। খুচরায় প্রতি কেজি আলু মিলছে ২০-২৫ টাকায়। গতবার একই সময়ে যা ছিল ৫৫-৬০ টাকা। এবার মৌসুমের শুরুতে নতুন আলু বিক্রি করে কৃষক উৎপাদন খরচ ওঠাতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। বেশি লাভের আশায় মজুত করে মৌসুমের শেষ দিকে এসেও বিপাকে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
গত বছর এসময় কৃষক বিক্রি করতে পেরেছেন ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। ১৩ থেকে ১৫ টাকায় উৎপাদন করা আলুর দাম তিনগুণ দেখে এবছর বেড়েছিল চাষাবাদ, পরে মজুতের প্রবণতাও বাড়ে। কিন্তু আলুর দামে ব্যাপক দরপতন হয়েছে বাজারে।
শুরু থেকে নিম্নমুখী দামের কারণে উৎপাদন খরচই ওঠেনি কৃষকের। এখন বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েছেন মজুত করা কৃষক ও বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে হিমাগার মালিকরাও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। কারণ, দাম না থাকলে অনেকেই হিমাগার থেকে মজুত আলু খালাস নেন না।
কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিগত বছর বাজার ভালো থাকায় এবার ‘অতি উৎপাদন’ প্রবণতা কৃষকদের সর্বনাশ করেছে। একই সঙ্গে এবছর প্রচুর ক্ষুদ্র ও বড় ব্যবসায়ী, যারা আলু মজুত করেছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এবার দাম না পেলে কৃষক আগামী সিজনে আলু উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হতে পারেন।
এবার চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। তাই দাম পড়ে গেছে। আগেও এমন হয়েছে। কারণ, আমাদের দেশে চাহিদার চেয়ে আলুর উৎপাদন বেশি। আবার রপ্তানি ও আলু প্রক্রিয়াকরণে আমরা অনেক পিছিয়ে।- কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম
২০২৪ সালে ভালো বাজার থাকলেও তার আগের কয়েক বছর আলুর দাম ছিল না। ২০২১ ও ২২ সালসহ মাঝে মধ্যেই আলু নিয়ে দেশে এমন সমস্যা হয়েছে। এটা উৎপাদন ব্যবস্থাপনার একটি বড় ব্যর্থতা। কৃষকদের বাঁচাতে আলু রপ্তানি বৃদ্ধি, সরকারি ব্যবস্থাপনায় আলু বিক্রির ব্যবস্থা ও মূল্য সহায়তা দিতেও বলছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা।
কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। তাই দাম পড়ে গেছে। আগেও এমন হয়েছে। কারণ, আমাদের দেশে চাহিদার চেয়ে আলুর উৎপাদন বেশি। আবার রপ্তানি ও আলু প্রক্রিয়াকরণে আমরা অনেক পিছিয়ে। সবচেয়ে বড় কথা আলু প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা ও রপ্তানি না বাড়িয়ে উৎপাদন বাড়িয়ে লাভ নেই।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশে কৃষিপণ্যের দাম কমে গেলে সরকার একটি নির্দিষ্ট দামে পণ্য কিনে নেয়। এভাবে মূল্য সহায়তা দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করা যায়। এছাড়া আলু সংরক্ষণ খরচের অর্ধেক বহন করতে পারে সরকার। পাশাপাশি সরকার যেমন টিসিবি বা ওএমসের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করে, সেভাবে বিক্রি করা দরকার।’
টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির প্রস্তাব
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে আলু বিক্রির একটি প্রস্তাব সরকারের বিবেচনাধীন। তেল, চিনি, ডালের সঙ্গে ১৫ টাকা কেজি দরে আলু দেওয়ার দাবি করেছে হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। তারা অর্থ, খাদ্য, বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।
- আরও পড়ুন
- ক্ষুব্ধ কৃষক/হিমাগারে ১ কেজি আলু রাখতে গুনতে হবে ৮ টাকা
- হিমাগারে আলু রাখতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন কৃষকরা
- ‘ব্যবসায়ীদের দখলে’ হিমাগার, ভাড়া কমলেও কমেনি ভোগান্তি
- সরকারি মূল্য নির্ধারণের দাবিতে নওগাঁয় সড়কে আলু ফেলে বিক্ষোভ
গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সভাও হয়েছে। তবে এখনো কোনো ফল আসেনি। ওই সভায় টিসিবির পণ্য তালিকায় আলু যোগ করতে যে পরিমাণ বাজেট দরকার, তা বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব।
সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আলু বিতরণ করা হলে অতিরিক্ত আলু সরবরাহ হয়ে যেত। এতে কৃষকও বাঁচতো। সেজন্য আমরা সরকারকে বারবার বলছি।- কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু
হিমাগার মালিকদের ওই সংগঠন বলছে, দেশে এবার চাহিদার তুলনায় ৪০ লাখ টন বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। এখন কোল্ড স্টোরেজ গেটে এলাকাভেদে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। অথচ এক কেজি আলুর এবার উৎপাদন খরচ অন্তত ১৭ টাকার বেশি। এর সঙ্গে হিমাগার ভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করলে এ খরচ দাঁড়ায় ২৫ টাকা। অর্থাৎ, হিমাগার গেটে আলু বিক্রি হচ্ছে খরচের তুলনায় ৮ টাকা কমে। এতে কৃষক মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে জানায় কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন।
কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আলু বিতরণ করা হলে অতিরিক্ত আলু সরবরাহ হয়ে যেত। এতে কৃষকও বাঁচতো। সেজন্য আমরা সরকারকে বারবার বলছি।’
তিনি বলেন, ‘গত বছর যখন আলুর দাম বেড়ে গেলো, তখন সরকার দাম বেঁধে দিয়েছে। কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালিয়েছে। এবার কমে গেলেও কৃষকের দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত।’
এবার উৎপাদন কত, চাহিদা কত?
দেশে আলুর সর্বোচ্চ বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ টন। কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ টন, যা গত বছরের চেয়ে ২৩ লাখ টন বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৬ লাখ টন।
দেশে আলুর উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় মুন্সিগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর আলুর বাম্পার ফলনের পর দাম না পাওয়া এবং সংরক্ষণ করতে না পারায় অধিকাংশ কৃষক কম দামে আলু বিক্রি করেন। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক বেশি হওয়া, হিমাগারে সংরক্ষণ করতে না পারা, দাম কম ও বাঁশের মাচায় সংরক্ষণ করা আলুতে পচন ধরার কারণে এখন কৃষকের মাথায় হাত।
দাম নেই বলে কৃষকরা আলু নিচ্ছে না। এতে আমরা মজুত আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কয়েক বছর আগেও এমন দরপতনের সময় হিমাগারের আলু ফেলে দিতে হয়েছিল, ব্যাপক লোকসান হয়েছে।-হিমাগার মালিক
মুন্সিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় দুই হাজার ৪শ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছিল আলুর। উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ ৬০ হাজার ১১৯ টন, যা গত বছরের তুলনায় ১৯ হাজার ৬৯ টন বেশি। এজন্য এ এলাকার অধিকাংশ কৃষক ও ব্যবসায়ী লোকসানে পড়েছেন।
দেশের সর্বোচ্চ আলু উৎপাদনকারী এলাকা মুন্সিগঞ্জে এবার ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষক-ব্যবসায়ীরা। আধারা ইউনিয়নের কৃষক মোবারক মিয়া জানান, তাদের উৎপাদিত হাজার হাজার টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার জায়গা পাননি। তাই কিছু আলু জমিতে স্তূপাকারে ও বাড়িতে ঘরের ভেতর বাঁশের মাচা তৈরি করে সংরক্ষণ করেছেন। সেগুলোতে পচন ধরছে। মুন্সিগঞ্জ সদর, টঙ্গিবাড়ী, সিরাজদিখান, শ্রীনগর, লৌহজং ও গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদেরও একই অবস্থা।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কৃষক মানিক মিয়া বলেন, ‘এবার এত আলু যে, কোল্ড স্টোরেজের আলু কেনার ক্রেতা নেই। ৭০০-৮০০ টাকা বস্তা (৬০ কেজি)। এই আলু উৎপাদনে খরচ এর চেয়ে প্রতি কেজিতে ৬ টাকা বেশি। কোল্ড স্টোর ভাড়া দিলে প্রতি কেজিতে ৯ টাকা লোকসান হচ্ছে।
কৃষকরা হিমাগার থেকে আলু নিচ্ছেন না
হিমাগার মালিকদের সংগঠন বলছে, দেশের ৩৫৩টি হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টনের বেশি। যেখানে গত বছর সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৪ লাখ টন। এখন পর্যন্ত হিমাগার থেকে মাত্র ১১ শতাংশ আলু বের হয়েছে। অথচ গত বছর একই সময়ে ৪১ শতাংশ আলু বের করেছিলেন কৃষকরা।
জয়পুরহাটের একজন হিমাগার মালিক বলেন, ‘দাম নেই বলে কৃষকরা আলু নিচ্ছে না। এতে আমরা মজুত আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কয়েক বছর আগেও এমন দরপতনের সময় হিমাগারের আলু ফেলে দিতে হয়েছিল, ব্যাপক লোকসান হয়েছে।’
রপ্তানির খবর কী?
বিশ্বে আলু রপ্তানির গড় হার বার্ষিক ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশের আলু রপ্তানি উৎপাদনের অনুপাতে কখনো এক শতাংশও হয়নি। যে কারণে আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ সপ্তম হলেও দশটি রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো স্থান নেই।
অথচ বাংলাদেশের চেয়ে কম আলু উৎপাদন করে পাকিস্তান পঞ্চম রপ্তানিকারক দেশ। পাকিস্তানে গড়ে ৮০ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়। আলু উৎপাদনের দিক থেকে তালিকায় দেশটির অবস্থান নবম। তবে দেশটি থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আলু রপ্তানিও হয়। প্রায় ১০ লাখ টনের বেশি আলু রপ্তানি করে দেশটি।
বাংলাদেশে কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হলেও রপ্তানি লাখ টনের ঘরে থাকে। যেখানে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম আলু উৎপাদনকারী দেশ। রপ্তানি করছে ২৬ বছর ধরে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এবছর রপ্তানি মৌসুম চলছে। মৌসুম শেষে রপ্তানির পরিমাণ ৬০ হাজার টন হতে পারে।
তথ্য বলছে, গত বছর (২০২৪ সাল) আলু রপ্তানি হয় মাত্র ১২ হাজার ১১২ টন, এর আগের বছরগুলোতে ছিল যথাক্রমে ৩২ হাজার ৩৯২ টন, ৬২ হাজার ৭২৬ টন, ৫১ হাজার ৭৬৩ টন এবং ৫৬ হাজার টন।
তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার দাম কম থাকায় আলু রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে জানিয়ে আলু রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জিল ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আলুর দাম কমে যাওয়ার কারণে এবার রপ্তানি করে ভালো মুনাফা হচ্ছে। তাছাড়া এবার আমদানিকারক দেশগুলোতে প্রচুর আলুর চাহিদা রয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার সুফলও পাচ্ছেন রপ্তানিকারকরা। পাকিস্তান সেভাবে আলু রপ্তানি করছে না এবছর। সেই অর্ডারগুলো বাংলাদেশে আসছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী পাকিস্তান।’
এ রপ্তানিকারক আরও বলেন, ‘এবার অন্য বছরের তুলনায় জাহাজ ভাড়া কম। প্রতি টন আলু ২৬০ থেকে ২৮০ ডলারে রপ্তানি করা যাচ্ছে। ডলারের দাম ভালো হওয়ার কারণে মুনাফাও ভালো হচ্ছে।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি আলু রপ্তানি হয় মালয়েশিয়ায়। মোট রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ যায় দেশটিতে। এছাড়া সিঙ্গাপুর, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে আলু। বেশ আগে রাশিয়ায় আলু রপ্তানি হতো, তবে এখন সেভাবে ওই দেশে আলু যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৪টি দেশে রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশের আলু।
এত উৎপাদনেও কেন বাড়ছে না রপ্তানি?
রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে রপ্তানিযোগ্য পর্যাপ্ত আলুর জাত নেই। ২৬ বছর ধরে রপ্তানি বাজারের উপযোগী জাতের অভাব রয়ে গেছে। জাতের এ সংকটের কারণে রপ্তানিকারকরা বিদেশি ক্রেতার চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না।
যদিও এখন পর্যন্ত দেশে ৯১টি নতুন আলুর জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। অধিকাংশের চাহিদা রপ্তানি বাজারে নেই। কারণ, বাংলাদেশের আলুতে শুষ্ক পদার্থের উপস্থিতি কম, যা বিদেশে নানান ফ্রাইড খাবার তৈরিতে খরচ বাড়ায়।
বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ও ফেরদৌস বায়োটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. ফেরদৌসী বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে আলুতে শুষ্ক পদার্থের উপস্থিতি কম থাকায় যখন এ আলু দিয়ে শিল্প-কারখানায় চিপস বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বানানো হয়, সেটা জ্বালানি সাশ্রয়ী হয় না। এছাড়া ওইসব আলু স্টার্চ বেশি বলে মচমচে হয় না।’
রপ্তানিকারকরা জানান, রপ্তানি উপযোগী জাতের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- লম্বাটে, চামড়া সাদা, অগভীর চোখ, দীর্ঘ সুপ্তিকাল, উচ্চ শুষ্ক পদার্থযুক্ত, সংরক্ষণযোগ্য ও উচ্চ ফলনশীল হতে হয়। দেশের বেশিরভাগ জাতের মধ্যে এসব গুণাবলি নেই।
এছাড়া বিশ্ববাজারে আলু রপ্তানির অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশের আলুতে হলোহার্টের উপস্থিতি। এটি একটি শারীরবৃত্তীয় রোগ, যা আলুর আকার বড় করা ও ফলন বাড়ানোর জন্য অনিয়ন্ত্রিত সেচ এবং সার ব্যবহারের ফলে ঘটে। প্রচলিত বেশ কিছু জাত হলোহার্টপ্রবণ। পরিমিত সার ও সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হলোহার্ট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
এনএইচ/এএসএ/এমএফএ/এএসএম