আলুর দাম একলাফে কমলো ২০০ টাকা

2 days ago 4

বগুড়ায় গত তিন দিনের ব্যবধানে নতুন আলুর দাম অনেকটায় কমে এসেছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বগুড়ার ফতেহ আলী ও রাজা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে নতুন পাকড়ি জাত লাল আলু ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, সাদা বা ক্যারেজ আলু বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে, যা নবান্ন উপলক্ষে ৪০০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। সোমবার (১৮ নভেম্বর) তা ৪২০ টাকায় ওঠেছিল।

জানা যায়, নবান্ন উপলক্ষে বাজারে নতুন আলুর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তবে বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, সরবরাহ কিছুটা বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম কমে এসেছে। 

বিক্রেতারা বলছেন, নবান্নে আলুর চাহিদা অনেক বেশি ছিল, কিন্তু সরবরাহ ছিল কম, ফলে দাম অতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছিল। এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় দাম কমেছে। তবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দাম আরও কমবে বলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা আশা করছেন।

ফতেহ আলীতে বাজার করতে আসা দীপক ঘোষ নামে এক ক্রেতা জানান, নবান্ন উপলক্ষে তিনি আলু কিনেছিলেন ৪০০ টাকা কেজি দরে, কিন্তু মঙ্গলবার কিনছেন মাত্র ২০০ টাকা কেজি। 

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সাধারণ জনগণ এক ধরনের জিম্মি হয়ে পড়েছি। ব্যবসায়ীরা যখন ইচ্ছা, দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই।’ 

তিনি আরও বলেন , বাজারে আলুর দাম বাড়ানোর মূল কারণ হলো ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।

বগুড়া জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদি হাসান বলেন, ‘এখনও নতুন আলু পুরোপুরি বাজারে ওঠতে শুরু করেনি। আর কিছুদিন পর সরবরাহ বাড়বে, তখন দাম আরও কমতে পারে। তবে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করে বাজারে দাম বাড়িয়ে দেয়।’ 

তিনি বলেন, ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় জেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং বৃদ্ধি করবে। বাজারে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের আরও তৎপর হওয়া জরুরি। বিশেষ করে নবান্নের মতো উৎসবকালীন সময়ে বাজারে চাহিদার বাড়তি চাপ থাকলেও, সরবরাহের অভাবে দাম বৃদ্ধি পায়। তবে, বর্তমানে বাজারে সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে, যা দাম কমানোর প্রভাব ফেলছে। তবে, সিন্ডিকেট ব্যবস্থা না হলে ভবিষ্যতে দাম আরও অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলবে।

এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পুরোদমে আলু উত্তোলন শুরু হলে দাম আরও কমবে এবং বাজারে মজুদ থাকলে দাম স্থিতিশীল থাকবে। তবে, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এবং বাজার মনিটরিংয়ের অভাব কিছুটা বাজার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে থাকে। বাজারের বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী আলুর দাম কমলেও ভোক্তাদের উদ্বেগ কাটেনি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের বাজার মনিটরিং আরও তীব্র করার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা ফরিদুল আলম জানান, এখন বাজারে যে আলু পাওয়া যাচ্ছে তা আগাম জাতের। মুনাফার আশায় কৃষকরা চাষ করেছে। এ আলু পুরোদমে বাজারে আসলেই দাম অনেকটায় কমে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

Read Entire Article