দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ইঁদুর নিধনে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর ‘বাঁশের তৈরি চোঙার ফাঁদ। কৃষকরা সনাতন পদ্ধতি বাদ দিয়ে ধানের জমিতে এ ফাঁদ ব্যবহার করছেন।
স্থানীয়রা জানান, দিনাজপুরে আমন ধানক্ষেতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। ইঁদুরের কাছ থেকে দানের জমি বাঁচাতে কৃষকেরা নানা কৌশল ব্যবহার করেও সুফল পাচ্ছিলেন না। তারা বিষটোপ, পলিথিনের নিশানা আর কলাগাছ পুঁতেও সমাধান না মেলায় এবার কৃষকেরা আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় প্রযুক্তি বাঁশের চোঙার ফাঁদে। এতে তারা দারুণ সুফল পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারাও পরামর্শ দিচ্ছেন বাঁশের চোঙা ফাঁদে পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিনহাজুল হক নবাব কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ফাঁদ তৈরির উপায় শিখিয়ে দিয়েছেন। এখন খরচ বিহীন এ ফাঁদ কৃষকেরা নিজেরা তৈরি করতে পারছেন।
সাইতারা ইউনিয়নের খোচনা গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান জানান, ইঁদুর মারা আমার নেশা হয়ে গেছে। গত ৬ মাসে প্রায় ৩ হাজার ইঁদুর মেরেছি। ইঁদুর মারার জন্য কৃষকরা আমাকে ডান দেন। আমিও তাদের ডাকে সাড়া দেই। শুক্রবার দিবাগত রাতে পূর্ব সাইতাড়া গ্রামের জমির উদ্দিনের ধানক্ষেতে ৪৪টি বাঁশের চোঙা ফাঁদে বসিয়েছিলাম।
শনিবার সকালে গিয়ে দেখি, ৩৫টি ফাঁদে ইঁদুর ধরা পড়েছে। প্রতিদিন তিনি কারও না কারও জমিতে বাঁশের চোঙার ফাঁদ বসান। ফাঁদে ইঁদুর নিধনে সফল হওয়ায় গত বছর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পুরস্কারও পান।
সদর উপজেলার ৪ নম্বর শেখপুরা ইউনিয়নের কিষাণবাজার এলাকার কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, গত দুই তিন বছর ধরে আমন ক্ষেতে ইঁদুর নিধনের জন্য বাঁশের তৈরি বাঁশের চোঙার ফাঁদ দিয়ে ইঁদুর নিধন করেন। এবারও তিনি বাঁশের চোঙার ফাঁদ ব্যবহার করছেন। সফলতাও পাচ্ছেন। এতে খরচও হয় না।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত এ বাঁশের ফাঁদ পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর। এক রাতে বহু ইঁদুর ধরা সম্ভব হওয়ায় কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন। প্রতিবছর ইঁদুর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে ধানসহ অন্যান্য ফসলও সুরক্ষিত থাকবে। বেশি ইঁদুর মারতে পারলে কৃষকদের পুরস্কৃতও করা হবে।
এমদাদুল হক মিলন/আরএইচ/জেআইএম