ইউএসএআইডির দেড় হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) প্রায় সব কর্মীকে ছাঁটাই বা প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নোটিশে বলা হয়েছে, ‘শুধু মিশন-গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম, মূল নেতৃত্ব ও বিশেষভাবে মনোনীত কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা’ বাদে বাকি সবাইকে বিশ্বব্যাপী প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হবে। এ সিদ্ধান্ত আজ থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রায় ১ হাজার ৬০০ কর্মীকে একসঙ্গে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, যেসব কর্মী এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়বেন, তারা ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ আনুষ্ঠানিক নোটিফিকেশন পাবেন। পাশাপাশি তাদের সুবিধা ও অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা জানানো হবে।
এ ছাড়া যেসব কর্মীকে অপরিহার্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের দেশটির স্থানীয় সময় ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টার মধ্যে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সরকারি ব্যয় সংকোচনের জন্য নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বিভাগ-এর নেতৃত্বে থাকা ইলন মাস্ক কার্যত ইউএসএআইডিকে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
মাস্ক ইউএসএআইডিকে একটি অপরাধী সংগঠন ও আমেরিকাবিরোধী চরম-বাম মার্ক্সবাদীদের বিষাক্ত গোষ্ঠী বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ও অন্যান্য ট্রাম্পপন্থি নেতারা দাবি করছেন যে, সংস্থাটি দুর্নীতি ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ে জর্জরিত এবং এটি মূল কাজের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউএসএআইডির সাবেক কর্মকর্তা ও মানবাধিকার কর্মীরা।
সংস্থাটির মানবিক সহায়তাবিষয়ক সাবেক উপ-সহকারী প্রশাসক মার্সিয়া ওং বলেন, এই সংস্থার সংকট মোকাবিলা বিশেষজ্ঞরা রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করেন। ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেওয়া একটি স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং মূর্খতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ইউএসএআইডি বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার সবচেয়ে বড় একক দাতা সংস্থা। ২০২৩ সালে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্যের ৭২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বিতরণ করেছিল।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রভাব কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।