ইউটিউব দেখে আনার চাষ, দেখতে যেন কাশ্মীরের বাগান 

2 days ago 6

উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইউটিউবের ভিডিও দেখে ভারতীয় ভাগওয়া জাতের ৯১টি আনার চারা সংগ্রহ করে এক বিঘা জমিতে রোপণ করেন আব্দুল্লাহ। প্রথমদিকে অনেকের কটু কথা ও বহু সমস্যা দেখা দিলেও তিনি আনার চাষে অনড় অবস্থানে থেকে অবশেষে সফলতার মুখ দেখেছেন। 

বলছিলাম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যুগিহুদা গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে তরুণ উদ্যোক্তা আনার চাষি সোহেল রানা আব্দুল্লাহর কথা। বিদেশি জাতের আনার চাষ করে তিনি যেমন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তেমনি স্থানীয়দের মধ্যেও জাগিয়েছেন নতুন উদ্দীপনা।

আব্দুল্লাহ জানান, ২০২১ সালে ইউটিউব দেখে পাশের জেলা থেকে ভারতীয় ভাগওয়া জাতের ৯১টি আনার চারা সংগ্রহ করে এক বিঘা জমিতে রোপণ করি এবং লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিচর্যা করতে থাকি। গাছ লাগানোর দুই বছর থেকেই ফুল আসা শুরু হয়। বর্তমানে তার পুরো বাগান ভরে গেছে আনার ফলে। একেকটি গাছে ৩০ থেকে ৮০টি পর্যন্ত ফল ধরেছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন বাগান দেখতে ভিড় জমাচ্ছে। লালচে-সবুজে আভা ছড়ানো ঝলমলে ফলগুলো যেন প্রকৃতির ক্যানভাসে আঁকা রঙিন তুলির আঁচড়। 

স্থানীয় কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, শুরুতে আমরা ভেবেছিলাম এই মাটিতে আনার হবে না। কিন্তু এখন ফলনে ভরপুর গাছ দেখে মনটা ভরে যায়। 

আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, আমার চাচা আর আব্দুল্লাহ একসঙ্গে আনার চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু চাচা ধৈর্যহারা হয়ে সব গাছ কেটে ফেলেছেন। আর আব্দুল্লাহ ধৈর্য ধরে পরিশ্রম ও পরিচর্যা করেছেন। যার সফলতা তিনি পেতে শুরু করেছেন।

দর্শনার্থী রহমান বলেন, ফেসবুকে ছবি দেখে এসেছি। সত্যিই চোখধাঁধানো দৃশ্য। মনে হয় যেন কাশ্মীরের কোনো বাগান। 

কৃষক উজ্জল খান বলেন, আমারও আনার বাগান করা ইচ্ছা আছে। সে কারণে এই বাগানটি দেখতে এসেছি। আব্দুল্লাহর কাছে থেকে পরামর্শ নিতে এসেছি।

উদ্যোক্তা সোহেল রানা আব্দুল্লাহ বলেন, প্রথমে অনেকেই নিরুৎসাহিত করেছিল। তবে আমি হাল ছাড়িনি। স্থানীয় বাজারে আনারের চাহিদা ভালো থাকায় আশা করছি এ মৌসুমে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব। ভবিষ্যতে আরও জমি নিয়ে আনার চাষ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। 

এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, আনার বাংলাদেশের আবহাওয়ায় একটি নতুন সম্ভাবনা। আমরা উদ্যোক্তাদের পাশে আছি। আব্দুল্লাহর সফলতা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে। আব্দুল্লাহর এই সাফল্য গ্রামজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। প্রথমদিকে যারা সমালোচনা করেছিল তারাই এখন আনার চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। 

 

Read Entire Article