ইতালি প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় সুমাইয়া আক্তার নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
সুমাইয়া আক্তার ওই গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাসির হাওলাদারের মেয়ে। এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) মধ্যরাত ২টার দিকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, এক বছর চার মাস আগে সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের ভরিয়াপাড়া গ্রামের সরোয়ার হাওলাদারের ছেলে ইতালি প্রবাসী জহিরুল হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমাইয়ার। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ইতালি চলে যাওয়ার কথা ছিল। ইতালি না নেওয়ায় পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। বেশ কিছুদিন ধরে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন সুমাইয়া। মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ঝগড়া হলে ফ্যানের সঙ্গেড় ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন তিনি।
নিহত সুমাইয়ার মা রুমি বেগম বলেন, ঝগড়ার পর রাত দেড়টার দিকে ইতালি থেকে মেয়ের জামাই জহিরুল আমাকে ফোন দিয়ে বলে, আপনার মেয়ে ৩ ঘণ্টা ধরে ফোন ধরতেছে না। এ কথা শুনেই সুমাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে আর দুনিয়াতে নাই। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল। এ জন্য আমার মেয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে থাকতে পারে নাই। আমার মেয়ের বিয়ের সময় দেওয়া ১০ ভরি স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে তারা। আমি এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চাই।
সুমাইয়ার বাবা নাসির হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ের পর ইতালি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জহিরুল তার পরিবারের বাধায় নেয় নাই। আমরা গরিব বলে আমার মেয়েকে সব সময় অমানুষিক নির্যাতন করত তারা। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মরে গেছে। আমার মেয়ে মরার পর কেউ দেখতেও আসে নাই। আমি চাই এমন নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আর যেন কারও সন্তানের সঙ্গে না ঘটে, সেজন্য সরকার ও প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।
আলামিন হাওলাদার নামের একজন বলেন, বিদেশ যাওয়া ও স্বর্ণালংকার নিয়ে সুমাইয়া ও তার শ্বশুর বাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরপর প্রায় দুই মাস আগে আমরা তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। সুমাইয়া বলেছিল, হয় আমাকে নিয়ে যাও না হলে আমি গলায় দড়ি দেব। আজ সেই কাজটাই করল। আমরা এর বিচার চাই।
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্ত শেষে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

2 hours ago
5









English (US) ·