ইতালিতে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কাফরুল থানার ইব্রাহিমপুর এলাকা থেকে চক্রের মূলহোতা ৩৫ বছর বয়সী জোসনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি টিম। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত জোসনা খাতুন নড়াইল জেলার দলজিৎপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পল্টন থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি। মামলাটি গত ২ জুলাই দায়ের করা হয়, যেখানে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে একই মামলায় চক্রের আরেক সদস্য মিলন মিয়া (৪২) গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে সোপর্দ হয়।
সিআইডির তদন্তে জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি প্রথমে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। পরে তাদের হাতে তুলে দিত জাল ভিসা। অনেক সময় পাসপোর্ট আটকে রেখে তাদের ভোগান্তিতেও ফেলা হতো। এ ছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়েও তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করত। রাজধানীর বাইরে ফরিদপুর, নড়াইল, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চক্রটির নেটওয়ার্ক বিস্তৃত ছিল।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ইতালিতে লোক পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে শতাধিক ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রতারণার মাধ্যমে আদায় করা অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে বলেও তথ্য মিলেছে।
সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত জোসনা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি শুধু বিদেশে চাকরির ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েই থেমে থাকেননি, সরকারি পদে বসানোর লোভ দেখিয়েও বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া তার মাদক ব্যবসার সঙ্গেও সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত সিআইডি ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগ পরিচালনা করছে। গ্রেপ্তারকৃতকে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।