ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মোবারকগঞ্জ চিনিকলের কৃষি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক গৌতম কুমার মন্ডল। বেসরকারি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতেও চাকরি করেন তিনি। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েট পদে কর্মরত গৌতম কুমার। তার বিরুদ্ধে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জোর করে বিমা করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চার বছর ধরে কর্মরত গৌতম কুমার। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিমা কোম্পানিটির গ্রাহকদের একটি তালিকা এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তালিকায় ১৫ জন গ্রাহকের তথ্য রয়েছে। তাদের প্রায় সবাই মোবারকগঞ্জ চিনিকলে বিভিন্ন পদে কর্মরত বলে জানা গেছে। এরমধ্যে রয়েছেন সিআইসি, সিডিএ, সাব-জোন প্রধান, আখচাষি, সিকিউরিটি গার্ডসহ বিভিন্ন পদে কর্মরতরা।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলে বিভিন্ন পদে কর্মরত ও প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কয়েকজন গ্রাহক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে জানান, তারা সবাই কৃষ্ণচূড়া প্রজেক্টের আওতায় স্কিমের গ্রাহক। তাদের এই বিমা করিয়েছেন মোবারকগঞ্জ চিনিকলের কৃষি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক গৌতম কুমার মন্ডল। বিমার পলিসি খুলতে না চাওয়ায় চিনিকলের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানিও করেছেন গৌতম কুমার। পরে তারা বাধ্য হয়ে পলিসি খুলেছেন। গ্রাহক বাড়ানোর মাধ্যমে নিয়মিত ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে আর্থিক সুবিধাও গ্রহণ করছেন গৌতম কুমার।
এ বিষয়ে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের সেন্টার ইনচার্জ (সিআইসি) কামাল হোসেন বলেন, তিনি ২০২৩ সালে বার্ষিক ৩১ হাজার টাকার ১০ বছর মেয়াদি একটি পলিসি করেছেন। এটি চিনিকলের গৌতম কুমার মন্ডলের মাধ্যমে করেছেন।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) গৌতম কুমার মন্ডল প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েট পদ কর্মরত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এখান থেকে কোনো বেতন-ভাতা নিই না। নতুন গ্রাহক দিলে তারা আর্থিক সুবিধা দেয়।’
সরকারি চাকরির পাশাপাশি অন্য স্থানে চাকরি করা যায় কি-না—এমন প্রশ্নের জবাবে গৌতম কুমার বলেন, আমি এখনই সংশ্লিষ্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে আমার নাম বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আ ন ম জুবায়ের বলেন, সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী কেউ সরকারি চাকরির পাশাপাশি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হতে পারবেন না। গৌতম কুমারের নামে যে অভিযোগ শুনেছি, তা খতিয়ে দেখা হবে।
শাহজাহান নবীন/এসআর/জিকেএস