আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ইমানের শাখা সত্তরটির কিছু বেশি অথবা ষাটটির কিছু বেশি। এর সর্বোচ্চ শাখা হলো স্বীকার করে নেওয়া যে, ‘আল্লাহ ব্যতীত ইলাহ নেই’, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া। লজ্জা ইমানের বিশেষ একটি শাখা। (সহিহ মুসলিম: ৩৫)
এই হাদিস থেকে ৩টি শিক্ষা আমরা পাই:
১. ইমান অন্তরের বিশ্বাস ও নেক আমল
ইমান অন্তরের সত্যায়ন ও মুখেও স্বীকার করা যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। লজ্জা যা মূলত অন্তরের অবস্থা তা ইমানের অন্তর্ভুক্ত, আবার রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া, যা বাহ্যিক নেক আমল তাও ইমানের অন্তর্ভুক্ত। ইমান নেক আমল করলে বাড়ে, গুনাহ করলে কমে। শুধু অন্তরের সত্যায়ন ইমান নয়। শুধু মুখের স্বীকৃতি ও অন্তরের সত্যায়নও ইমান নয়। আবার মুনাফিকদের মতো বিশ্বাসহীন নেক আমলও ইমান নয়। অন্তরের সত্যয়ন, মুখের স্বীকৃতি ও নেক আমল এই তিনের সমষ্টিই হলো ইমান।
২. নেক আমলের মাধ্যমে ইমান বৃদ্ধি পায়
এটা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ যে তিনি ইমানকে বহুসংখ্যক নেক কাজ ও স্বভাবে বিভক্ত করেছেন। মুসলমানরা এই নেক কাজগুলো করে নিজেদের ইমান ও সওয়াব বাড়াতে পারে। ইমানের এই শাখাগুলোর মর্যাদা ও গুরুত্বও সমান নয়। ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই’ বলা ইমানের এমন শাখা যা ছাড়া ইমান শুদ্ধই হয় না। বাবা-মায়ের প্রতি সদাচার করা ইমানের শাখা যা ওয়াজিব বা অবশ্য করণীয় আমল। লজ্জা ইমানের শাখা যা একটি উত্তম স্বভাব, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়াও ইমানের শাখা যা একটি শরঈ আদব।
৩. উত্তম নিয়ত থাকলে দৈনন্দিন কাজও নেক আমল গণ্য হয়
মুসলমানের বিশ্বাসগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাজগুলো ইমানের অন্তর্ভুক্ত। একজন মুমিন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, নবীজির (সা.) সুন্নত অনুসরণ করে যে কাজই করে তাই নেক আমল ও সওয়াবের কাজ। ইবাদতের পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের সাথে সম্পর্কিত বহু কাজ ও অভ্যাসও সওয়াবের কাজ হতে পারে উত্তম নিয়তের কারনে। উত্তম নিয়ত না থাকার কারণে এমন অনেক সওয়াব থেকে আমরা বঞ্চিত হই যা খুব সহজেই পেতে পারতাম।
ওএফএফ