ইশার নামাজের পর কি তাহাজ্জুদ পড়া যাবে?

2 weeks ago 18

ইশার পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত সময়ের যে কোনো অংশেই তাহাজ্জুদ পড়া যায়। তবে রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদ পড়া সবচেয়ে উত্তম। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إِنَّ ‌صَلَاةَ ‌آخِرِ ‌اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ.

শেষ রাতের সালাতে (ফেরেশতাগণের) উপস্থিতি থাকে। আর এটা সবচেয়ে উত্তম। (সহিহ মুসলিম: ৭৫৫) 

এ হাদিসের আলোকে আমরা বলতে পারি তাহাজ্জুদ রাতের শেষাংশে পড়া সবচেয়ে উত্তম। তবে কারও পক্ষে শেষ রাতে ওঠা কষ্টকর হলে ইশার পরও তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ রয়েছে।

তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নামাজ। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর নফল নামাজসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ আমল তাহাজ্জুদের নামাজ।  হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন,

أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرّمُ، وَأَفْضَلُ الصّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلاَةُ اللّيْلِ.

রমজানের পর রোজা রাখার উত্তম সময় মুহাররম মাস আর ফরজ নামাজের পর উত্তম নামাজ রাতের নামাজ। (সহিহ মুসলিম: ২৭২৫) 

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللّيْلِ فَإِنّهُ دَأَبُ الصّالِحِينَ قَبْلَكُمْ، وَهُوَ قُرْبَةٌ إِلَى رَبِّكُمْ، وَمَكْفَرَةٌ لِلسّيِّئَاتِ، وَمَنْهَاةٌ لِلإِثْمِ.

আপনারা কিয়ামুল লাইলের প্রতি যত্নবান হোন। কারণ এই নামাজ আপনাদের পূর্ববর্তী নেক ব্যক্তিদের অভ্যাস এবং রবের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম, পাপরাশী মোচনকারী এবং গোনাহ থেকে বাধা প্রদানকারী। (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৯)

আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনও তাহাজ্জুদ ছাড়েননি। ছুটে গেলে কাজা করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবিজি রাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এত বেশি নামায পড়তেন যে, তার পা ফুলে যেতো। নবিজির (সা.) কষ্ট দেখে আয়েশা (রা.) একদিন বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এত কষ্ট করছেন, অথচ আপনার পূর্বাপর সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে! আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার কি শোকর আদায়কারী বান্দা হওয়া উচিত নয়? (সহিহ বুখারি: ৪৮৩৭, সহিহ মুসলিম: ২৮২০) 

অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, আয়েশা (রা.) আবদুল্লাহ ইবনে কাইসকে (রা.) বলেছেন, হে আবদুল্লাহ! কিয়ামুল লাইল কখনো ছেড়ো না! নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ নামাজ কখনো ছাড়েননি। কখনো অসুস্থতা বা দুর্বলতা বোধ করলে বসে আদায় করতেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৩০৯) 

ওএফএফ/জিকেএস

Read Entire Article