ইসরায়েলের সঙ্গে যে কোনো সময় নতুন আরেকটি সংঘাত শুরু হতে পারে। সম্ভাব্য সেই যুদ্ধের জন্য তেহরান প্রস্তুত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। মঙ্গলবার সৌদি সংবাদমাধ্যম আশারক আল-অওসাতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সবকিছুই সম্ভব, এবং তেহরান সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।”
আরাগচির ভাষায়, ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন কোনো সংঘাত অসম্ভব নয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন জেদ্দায়, যেখানে তিনি ইসলামিক কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গাজার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন।
তিনি দাবি করেন, জুন মাসে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানকে নিয়ে তাদের কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। আরাগচি বলেন, আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইসরায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছি, তারা ভাবছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের থামানো সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ১২ দিন পর ইসরায়েলই শর্তহীনভাবে যুদ্ধ স্থগিতের প্রস্তাব দিয়েছিল। যেহেতু তাদের প্রস্তাব শর্তহীন ছিল, আমরা তা গ্রহণ করেছি।
আরাগচি বলেন, শত্রুরা কেবল কূটনীতি বা সংলাপের মাধ্যমে নয়, ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্যবস্তু করতে চেয়েছিল। যারা ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই করে, তাদের শক্তিশালী হতে হবে। তিনি সতর্ক করেছেন, কোনো দেশ ইসরায়েলকে ছাড় দিতে পারবে না।
তিনি দাবি করেছেন, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যকে তেলসংক্রান্ত যুদ্ধে টানতে চেয়েছিল, কারণ আইডিএফ ইরানের তেল স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল অপারেশন রাইজিং লায়নের সময়। আরাগচি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি যুদ্ধ গালফ অঞ্চলে ছড়াতে না দেওয়ার জন্য। গালফের সীমান্তবর্তী দেশগুলোকে ইসরায়েলের নীতির দিকে নজর দিতে হবে, ইরানের দিকে নয়।
তিনি উল্লেখ করেন, এসব দেশের মধ্যে আব্রাহাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন, এছাড়া ওমান ও কাতারও রয়েছে। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ইরান কাতারের আল উদেইদ এয়ারবেসকে লক্ষ্য করেছিল।
আরাগচি এসব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে, তারা তা ছিন্ন করুক এবং বাণিজ্য বন্ধ করুক। তিনি এটিকে গাজার জন্য ‘প্রায়োগিক পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, গাজার বাসিন্দারা আমাদের বিবৃতি বা সিদ্ধান্তের চেয়ে বেশি প্রয়োজন কার্যকর সহায়তা। তাদের প্রথমে খাদ্য, পানি এবং ওষুধ দরকার। তারপর শান্তি, ন্যায় ও অবরোধের অবসান আসবে।
সূত্র : দ্য জেরুজালেম পোস্ট