ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দি। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। এ তালিকায় মুক্তি পেতে যাচ্ছেন নায়েল বারঘুতি নামের এক ফিলিস্তিনি বন্দি। তিনি ৪৫ বছর ধরে ইসরায়েলি কারাগারে আটক রয়েছেন।
নায়েল বারঘুতি একজন ফিলিস্তিনি বন্দি ও অধিকার কর্মী, যিনি ইসরায়েলি কারাগারে দীর্ঘ সময় ধরে আটক রয়েছেন। তাকে ফিলিস্তিনি সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭৮ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রথমবার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।
নায়েল বারঘুতি ১৯৫৭ সালে ফিলিস্তিনের রামাল্লা জেলার কুবার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অংশ নেন। ১৯৭৮ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে, বারঘুতি একজন ইসরায়েলি বাস চালককে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং তিনি ইসরায়েলি কারাগারে প্রায় ৪৫ বছর অতিবাহিত করেন। এই দীর্ঘ কারাবাস তাকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের একজন করে তোলে।
অবদান
ফিলিস্তিনি সংগ্রামের প্রতীক : নায়েল বারঘুতি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামের একটি প্রতীক। তার দীর্ঘ কারাবাস এবং অটল মনোবল ফিলিস্তিনি আন্দোলনে অনুপ্রেরণা যোগায়।
বন্দি আন্দোলনে ভূমিকা : বারঘুতি কারাগারে থাকাকালীন ফিলিস্তিনি বন্দিদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি বন্দিদের মধ্যে সংগঠিত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান।
ফিলিস্তিনি ঐক্যের প্রতীক : বারঘুতি ফিলিস্তিনি সমাজে ঐক্য ও সংহতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হন। তার মুক্তির দাবি ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর মধ্যে একত্রিত হওয়ার একটি কারণ হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ : বারঘুতির মামলা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনার সূত্রপাত ঘটায়। তার মুক্তির দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমর্থন পায়।
ব্যক্তিগত ত্যাগ ও সংগ্রাম : বারঘুতি তার যৌবনের পুরো সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, যা তার ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক। তার জীবনী ফিলিস্তিনি তরুণদের মধ্যে স্বাধীনতা ও ন্যায়ের জন্য লড়াই করার প্রেরণা জোগায়। ইসরায়েল তাকে ১১২ বছর কারাদণ্ড দেয়। ২০০৯ সালে তিনি বিশ্বের দীর্ঘতম রাজনৈতিক কারাবন্দি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নেন।