গাজায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সম্মিলিত শাস্তি কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে গুতেরেস জানান, গাজার মানবিক সংকট এখন তৃতীয় বছরে প্রবেশ করেছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অন্য যেকোনো সংঘাতকে ছাড়িয়ে গেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) নির্দেশনা উপেক্ষা করেই গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। দ্রুত এসব আদেশ কার্যকর করার আহ্বান জানান তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গাজায় চলমান ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি ইসরায়েলি সরকারকে দায়ী করে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান।
এরদোয়ান বলেন, বিশ্বের চোখের সামনে ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে, শিশুরা হত্যা হচ্ছে অথচ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। তিনি গাজার ভয়াবহ ছবি প্রদর্শন করে উল্লেখ করেন, এ ভূমি এখন আর মানুষের জন্য নয়, এমনকি পশুপাখি কিংবা উদ্ভিদের জন্যও বাসযোগ্য নয়।
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ বলেন, শান্তি আসবে যখন ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিরা পাশাপাশি বসবাস করতে পারবে। তিনি গাজার ওপর দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলাকে ‘নির্দয়’ আখ্যায়িত করে জেরুজালেমে চলমান লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ জানান।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা পরিস্থিতিকে ‘অন্যায্য গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ফিলিস্তিনিরা বিলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে আছে এবং কেবল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তারা টিকে থাকতে পারবে।
লুলা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাজার হাজার নারী-শিশু গাজার মাটিতে সমাহিত হয়েছে, তাদের সঙ্গেই কবর দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন ও পশ্চিমা নৈতিকতার ভ্রান্ত ধারণাকে। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বাস্তুচ্যুতির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
লুলা আরও দুঃখ প্রকাশ করেন বলেন, আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে এ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের আসন গ্রহণে অনুমতি দেয়নি। সূত্র : শাফাক নিউজ